জাবিতে তীরে এসে স্বপ্ন ডুবল চার ‘জালিয়াত’ ভর্তিচ্ছুর

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৭, ২১:২৩ | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭, ২১:৩৬

জাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

তাদের স্বপ্ন ছিল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে একেকজন তিন থেকে ছয় লাখ টাকা তুলে দিয়েছিলেন জালিয়াতি চক্রের হাতে। তাতে বিভিন্ন ইউনিটে মেধা তালিকার প্রথম দিকে স্থান করে নিয়েছিল তারা। কিন্তু তীরে এসে স্বপ্ন ডুবল তাদের। সাক্ষাৎকারে হাতের লেখায় গরমিলে ধরা পড়ে চার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এখন থানায়।

রবিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তির সাক্ষাৎকার দিতে এসে উপস্থিত শিক্ষকদের কাছে ধরা পড়েন ওই চার শিক্ষার্থী। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

আটক চারজনের মধ্যে তিনজন জিজ্ঞাসাবাদে জালিয়াতির কথা স্বীকার করে। তারা হলো বগুড়ার আদমদীঘির মাহবুব হোসেন (রোল- ৫৩০৯৪২), ময়মনসিংহের ইমাম হোসেন (রোল- ৬৩৭৩৪৪) ও কেরানীগঞ্জের অমিত হাসান (রোল- ৮১২৬৮৬)

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা মাহবুব হোসেন জালিয়াতি চক্রের সদস্য সনদের সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুক্তি করে। বিনিময়ে মাহবুবের পরিবর্তে সনদ পরীক্ষা দেন। এতে মাহবুব ‘ই’ ইউনিটের (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন।

ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের ইমাম হোসেন ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে রাহাত নামের একজন দিয়ে পরীক্ষা দেয়ান। ইমাম ‘এফ’ ইউনিটের (আইন ও বিচার অনুষদ) মেধা তালিকায়  তৃতীয় স্থান পান।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের অমিত হাসানও ছয় লাখ টাকায় নিজের পরীক্ষা দেয়ান সনেট নামের একজনকে দিয়ে। অমিত পান ‘এইচ’ (আইআইটি) ইউনিটের মেধা তালিকায় ১১তম স্থান।

অমিত জিজ্ঞসাবাদকালে জানান তিনি ফাঁস হওয়া প্রশ্নে তিনি এইচএসসি পরীক্ষ দিয়েছেন। অমিত বলেন, ‘যদি আমার এখানকার (জাবির) পরীক্ষা বাতিল করেন, তাহলে তো আমি এইচএসসি পরীক্ষারও প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। তাহলে এখন আমার এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টও বাতিল করেন।’

আটক অন্যজন কুষ্টিয়া সদর থানার আশিকুল হাসান রবিন  ‘এফ’ ইউনিটে (আইন ও বিচার অনুষদ) ১৬তম স্থান লাভ করেন।  তার দাবি তিনি কোনো জালিয়াতি করেননি। রবিন বলেন, ‘আমি জালিয়াতি করি নাই। আমাকে এখন পরীক্ষা দিতে দিলে আমি পরীক্ষা দিতে পারব। আমি নার্ভাস থাকার কারণে ঠিকমতো লিখতে পারি নাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘তার লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে সেও অপরাধী। তাই তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ বাকি ব্যবস্থা নেবে।’

আটকৃতদের বিষয়ে আশুলিয়া থানার এসআই নয়ন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী তাদের আটক করা হয়। থানায় নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/মোআ)