দিনাজপুরে ইজতেমার আখেরি মোনাজাত আজ

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর
দিনাজপুরে সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ

তাবলিগ জামায়াতের দিনাজপুর জেলা ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে প্রায় ছয় লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে সর্ববৃহৎ জুমার নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার তৃতীয় দিনে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এই ইজতেমা। আখেরি মোনাজাতের অংশ নিতে ইতালিতে রাষ্ট্রীয় কাজে অবস্থানরত দিনাজপুর জেলা সদরের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম দিনাজপুরে এসেছেন। তার রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ৩ ডিসেম্বর দিনাজপুরে ফেরার কথা ছিল। তবে তিনি আগেই ছুটে এসেছেন দিনাজপুরে।

আয়োজকদের দাবি ইতিহাসে দিনাজপুরে এটিই সর্ববৃহৎ জামায়াত। যাতে লাখ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন। আজ আখেরি মোনাজাতে আট থেকে ১০ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পাবেন বলে আয়োজকরা আশা করছেন। দিনাজপুর জেলা সদরের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এ মাঠেই তৈরি করেছেন এশিয়া উপ-মহাদেশের বৃহত্তর ঈদের জামাতের মিনার।

গোর-এ শহীদ ময়দানে ইজতেমাস্থলে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য শুক্রবার সকাল থেকেই মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টা বাজতে না বাজতেই গোটা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ইজতেমাস্থলের প্যান্ডেলের বাইরে আরও কয়েকগুণ জায়গাজুড়ে মুসল্লিরা জমায়েত হন।

দুপুর পৌনে দুইটায় জুমার অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন ঢাকাস্থ কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. রবিউল ইসলাম।

ইজতেমা আয়োজন কমিটির প্রধান (জিম্মাদার) রায়হানুল আমিন চৌধুরী জানান, ইজতেমাস্থলের যে প্যান্ডেল স্থাপন করা হয়েছে তাতে এক লাখ ৬০ হাজার মুসল্লির স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা রাখা হয়। কিন্তু শুক্রবারের জুমার নামাজে এই প্যান্ডেল ছাড়িয়ে আরও কয়েকগুণ জায়গাজুড়ে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেছেন। জুমার নামাজে ছয় লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগম ঘটে বলে ধারণা করছেন তিনি।

রায়হানুল আমীন চৌধুরী জানান, শনিবার দুপুরে ১২টায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিন দিনব্যাপী দিনাজপুর জেলা ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাবলিগ জামায়াতের এই ইজতেমা।

দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলার ছাড়াও উত্তরাঞ্চলসহ দেশ-বিদেশের বেশ কিছু এলাকা থেকে তাবলিগ জামাতসহ সর্বস্তরের মুসল্লিরা এই ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন।

মুসল্লিদের অজু-গোসলের পানি সরবরাহের জন্য ৩০টি টিউবওয়েল, একটি সাবমারসেবল পাম্প, তিনটি মোটর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ স্যানিটেশনের জন্য ৪০০ টয়লেট তৈরা করা হয়েছে। বিদেশি মেহমান ও তাবলিগ জামাতের বৃদ্ধ সাথীদের জন্য মাঠের পশ্চিম পাশে খাস কামরা (বিশেষ কক্ষ) তৈরি করা হয়েছে। এই খাস কামরায় আগত বিদেশি মেহমান ও তাবলিগ জামাতের বৃদ্ধ সাথীরা রয়েছেন।

দিনাজপুর তাবলিগ জামাতের আমির (জিম্মাদার) মো. লতিফুর রহমান জানান, মানুষকে দ্বীনের পথে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই ইজতেমার আয়োজন। মানুষ কীভাবে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগির দিকে রজু হবে, মানুষের মাঝে হক তথা সঠিক পথ কবুল করার যোগ্যতা তৈরি হবে, আখেরাতের জিন্দেগি বা মৃত্যুর পরর্বতী জীবন কেমন হবে এবং কীভাবে মানুষ আখেরাতমুখী হবে এ সব বিষয়ে এই ইজতেমায় বয়ান করা হচ্ছে। এজন্য স্থানীয় প্রশাসন নিয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই ইজতেমায় ইন্দোনেশিয়া থেকে আগত একটি জামাত অংশগ্রহণ করছে। কাকরাইলের মুরব্বিদের মধ্যে মাওলানা জোবায়ের হোসেন, মাওলানা মো. রবিউল হক, মাওলানা মো. মোশাররফ হোসেন ও মাওলানা মো. ফারুক লক্ষীপুরী আগত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান করছেন। এ ছাড়া মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান করছেন স্থানীয় তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরা।

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/এসএএস/জেবি)