দুই সন্তান সিজারে, আবার গর্ভবতী হওয়ায় চিকিৎসকের বকুনি

প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০১৮, ১৪:২২ | আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮, ১৪:২৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

সিজারে জন্মানো প্রথম দুই সন্তানের পরেও আবার গর্ভবতী হওয়ায় চিকিৎসকের কাছ থেকে তীব্র ভৎসনা জুটল এক গর্ভবতীর৷ বহির্বিভাগের টিকিট শুধু ছিঁড়েই ফেলা হলো না, নিরাপত্তাকর্মী ডেকে সেখান থেকে এক রকম ধাক্কা দিয়েই বের করে দেয়া হলো সেই নারীকে৷

গতকাল শনিবার এমন ঘটনারই সাক্ষী রইল কলকাতার সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম৷ অপমানিত ওই অন্তঃসত্ত্বা বিচার চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন উপাধ্যক্ষের৷

হোলির আমেজ কাটতেই আসন্ন সন্তানের জন্মের প্রস্তুতিতে বালিগঞ্জের বাসিন্দা সাড়ে তিন মাসের গর্ভবতী নিলু কানু শনিবার হাজির হন পিজি-তে৷ দ্বিতীয় সন্তানও এখানেই হয়েছিল৷ তাই ভরসা ছিল৷ এ দিন সকালে ননদ গুঞ্জা কানুকে হাসপাতালের গাইনি বহির্বিভাগে আসেন নিলু৷ কিন্তু সেখানে তার জন্য কী অপেক্ষা করছে , ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি৷

বহির্বিভাগ থেকে বেরিয়ে বিধ্বস্ত নিলু বলেন, ‘চার নম্বর ঘরে যে ডাক্তার দিদি ছিলেন, তিনি খুব খারাপ ব্যবহার করেছেন৷ আগে দু’টো সিজারিয়ান বাচ্চা আছে জেনেই খেপে যান ওই ডাক্তার৷ বলেন, আগের দুটো বাচ্চাকে মেরে তবে এই সন্তান নিতে!’

একজন নারী চিকিৎসকের মুখ থেকে এমন কথা শুনে স্থির থাকতে পারেননি ৩২ বছর বয়সী এই গর্ভবতী নারী৷

তিনি বলেন, ‘আমি বললাম, এমন খারাপ কথা কেন বলছেন? আমার স্বাস্থ্যের কোনও সমস্যা থাকলে বলুন না কী করতে হবে৷ অনেকেই তো দুটো সিজারের পরেও তৃতীয় বাচ্চা নেয়৷ তার জন্য আমার দুটো মেয়েকে মেরে ফেলতে হবে!’

নিলুর সঙ্গে চিকিৎসকের কথা কাটাকাটি শুনে বহির্বিভাগে গিয়ে ঢোকেন গুঞ্জা৷ তিনি বলেন , ‘আমরা ওই চিকিৎসকের কথার প্রতিবাদ করতেই উনি বলেন, অন্য হাসপাতালে গিয়ে দেখাতে৷ তারপর সিকিউরিটি ডেকে বের করে দেন৷ সিকিউরিটি গার্ড অন্য রোগীদের সামনেই আমাদের টিকিট নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেন৷’

কাঁদতে কাঁদতে নিলু ছুটে যান উপাধ্যক্ষের কাছে নালিশ জানাতে৷ লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয় তাকে৷ নিলুকে নিয়ে ওই দিনের গাইনি বহির্বিভাগের ইউনিট প্রধান এস এন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যান৷ পিজিটি প্রথম বর্ষের অভিযুক্ত ছাত্রীকে ডেকে পাঠানো হয় সেখানে৷ নিলুর সামনে গোটা ঘটনা অস্বীকার করেন ওই শিক্ষার্থী চিকিৎসক৷নিলুর বহির্বিভাগের টিকিট ছিঁড়ে ফেলার কথাও মানেননি তিনি৷ যদিও পরে ওই চার নম্বর ঘরের ডাস্টবিন থেকেই উদ্ধার হয় নিলুর টিকিট৷

চিকিৎসক এস এন বন্দ্যোপাধ্যায় পরে বলেন, ‘আমাদের ওই ছাত্রী ভিন রাজ্যের৷ রোগীর সঙ্গে কমিউনিকেশনে হয়তো সমস্যা হয়েছে৷ এই সমস্যা যাতে আর না হয়, সেটা আমি দেখব৷ আর ওই প্রসূতিকেও আমরা দেখছি৷ ওর চিকিৎসায় কোনও খামতি থাকবে না।’

তার সংযোজন, ‘আসলে দু’বার সিজারের পর তৃতীয় বার সন্তানধারণ মায়ের স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে৷ আমাদের ছাত্রী হয়তো সেটা ভালোভাবে বোঝাতে পারেননি৷ রোগীও উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন৷’

(ঢাকাটাইমস/৪মার্চ/এসআই)