মনপুরায় দুর্যোগ প্রস্তুতি মহড়া

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০১৮, ২০:৫৯

ইকরামুল হক, ভোলা

বিস্ত্রীর্ণ এলাকাজুড়ে একটি গ্রাম। সেখানে সারি সারি কুড়েঘর। কৃষক, জেলে, বাউল, ভিক্ষুক, কামার, মোড়ল ও চেয়ারম্যানরসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের বাস সেখানে।  পুকুর, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাটির কিল্লা, টিউবওয়েল, দোকান, কাচা-পাকা লেট্রিন রয়েছে আদর্শ গ্রামটিতে। সবজির ক্ষেত আর বাহারি প্রজাতির গাছপালা দিয়ে সাজানো গ্রামের মেঠোপথ ও বাড়ির আঙ্গিনা। দেখলেই মনে হবে একটি সাজানো গোছানো গ্রাম। 

কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ঝড় এসে এসব ঘর বিধ্বস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো গ্রামটি। এভাবেই পাল্টে যায় গ্রামের চিত্র। দুর্যোগের আগে ও পরে কী ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েন গ্রামের মানুষ সে চিত্রই তুলে ধরা হলো ঘূর্ণিঝড় ‘মহড়া’র মাধ্যমে। এরমধ্যে দিয়ে সাগর উপকূলের দুর্যোগ কবিলত মানুষের সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। 

মঙ্গলবার বিকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ বরিশাল অঞ্চল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ‘জানবে বিশ্ব জানবে দেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে ভোলার মনপুরায় পালিত হয় জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস।

দিবসটি উপলক্ষে উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার ছমেদপুর স্কুল মাঠে ২০০ জেলের মধ্যে জীবন রক্ষাকারী বয়া, দুর্যোগ মহড়া এবং গণনাটক অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, উত্তর সাকুচিয়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হাসেম সিরাজ কাজী। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মনপুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধুরী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কারিতাস বাংলাদেশ এর সহকারী নির্বাহী পরিচালক মি. সেবাস্টিয়ান রোজারিও, কারিতাস বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক মি. ফ্রান্সিস বেপারী, মোস্তাফা কামাল, মোক্তার হোসেন প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘মনপুরা একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা, এখানকার মানুষ ঝুঁকির মধ্যে থাকে। দুর্যোগকবলিত মানুষকে সচেতন করে তুলতে কারিতাস কাজ করে আসছে, যা প্রশংসনীয়।’ ভবিষ্যতের এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেদের মাঝে জীবরক্ষাকারী বয়া বিতরন করেন প্রধান অতিথি। পরে মহড়ায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।  এ ধরনের একটি ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে দুর্যোগ বিষয়ে সচেতন হলো উপকূলের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরার মানুষ।

এ ব্যাপারে কারিতাস বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক মি. ফ্রান্সিস বেপারী বলেন, কারিতাস মনপুরা উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে ঘূর্ণিঝড় বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলার লক্ষে কাজ করছে। এরমধ্যে রয়েছে দুর্যোগের আগে, দুর্যোগকালীন সময় এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তিনটি ধাপে কাজ করে। এছাড়াও দুর্যোগ মোকাবেলায় টেকশই ঘর ও উঁচু গৃহ নির্মানে পরামর্শ দিয়ে থাকে। উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নে মুক্তি-২ প্রকল্পের অধীনে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/প্রতিনিধি/জেবি)