মাদারীপুরে নবদম্পতিকে থানায় রেখে ‘নির্যাতন’

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৮, ২০:০৭ | আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৮, ২০:০৯

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মাদারীপুরের ডাসার থানার এএসআই অভিজিতের বিরুদ্ধে নবদম্পতিকে থানায় আটকে রেখে টাকার জন্য নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে একজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে টাকা না পাওয়ায় রিপনকে ছাড়া হয়নি।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার মনির খানের ছেলে রিপন খানের সাথে মুন্সিগঞ্জের সাহাবদ্দিন আহমেদের মেয়ে শশী আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই প্রেমের সূত্র ধরেই তারা বিয়ে করেন। বুধবার সকালে ডাসার থানার পশ্চিম বনগ্রামের আত্মীয় হনুফা সন্নামতের বাড়িতে বেড়াতে আসেন এই নবদম্পতি। পরে ডাসার থানার এএসআই অভিজিত বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রিপন ও শশী দম্পতিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় রিপন ও শশীর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় শারীরিক নির্যাতন চালান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

আটকের বিষয়টি একদিন পার হলে জেলা পুলিশে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। কোন আসামি আটকের পরপরই জেলা পুলিশকে জানানোর নিয়ম থাকলেও তাও মানা হয়নি। বিধান মোতাবেকর আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর্টে চালান দেয়ার কথা থাকলেও তাও করা হয়নি। এতে করে আইনের চরম লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি মানবাধিকার কর্মীদের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয় স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে শশী আক্তারকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে টাকা না পাওয়ার কারণে রিপনকে ছাড়া হয়নি।

রিপনের বাবা মনির খান বলেন, ‘আমার ছেলে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরেই বিয়ে করেছে। প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ের বিয়ে করা তো অপরাধ নয়। মেয়ের বাবাও তো আমার ছেলের নামে কোন মামলা করেনি। ডাসার থানা পুলিশ এখন আমার ছেলেকে ছেড়ে দিতে একলাখ টাকা দাবি করেছে। আমরা গরিব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাব? অপরাধ করলে পুলিশ কোর্ট চালান দিয়ে দেবে তা না করে থানায় আটকে রাখা হয়েছে।

আইনজীবী এবং মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেল বলেন, কাউকে কোন অপরাধে আটক করলে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর্টে চালান দেয়ার বিধান রয়েছে। এছাড়া বিনা অপরাধে কাউকে আটকে রাখা একধরনের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ব্যপারে এএসআই অভিজিত টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি নির্যাতন করিনি। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে- তাহলে আমার বিচার হবে।

ডাসার থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, মেয়েকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ছেলের অভিভাবকরা আসলে তাকেও ছেড়ে দেয়া হবে। টাকা দাবি এবং শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, আটকের বিষয়টি থানা থেকে আমাদের জানানো হয়নি। তবে আটকের পরেই আমাদের জানানোর নিয়ম রয়েছে এবং কোন অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পেলে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর্টে চালান দেয়ার বিধান। দু-একজন খারাপ কর্মকর্তার কারণে পুরো পুলিশ তাদের অপরাধের দায়ভার গ্রহণ করবে না।

(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)