খালেদার চার মাসের জামিন

প্রকাশ | ১২ মার্চ ২০১৮, ১৪:৩৪ | আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮, ১৬:০৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বয়স ও শারীরিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে আদালত জানিয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন।

আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটনি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে আপিল শুনানির জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে পেপারবুক প্রস্তুত করতেও নির্দেশ দিয়েছেন। পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার পর যেকোনো পক্ষ চাইলে আপিল শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে।

আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের জানান, ‘আদালত আজ জামিনের আদেশ দিয়েছে। এখন আদেশের কপি বিচারিক আদালতে যাবে। সেখানে থেকে আদেশ যাবে কারাগারে। এরপর খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হবেন।’ আগামীকালের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, যে মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়া অবশ্যই খালাস পাবেন।

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকার যদি অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার না দেখায়, তাহলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। রায়ের পর খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে নেয়া হয়।

একই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। এদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন কারাগারে আছেন। বাকি তিন জন তারেক রহমান, জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান এবং সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী পলাতক।বিচারিক আদালতে দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপরই গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতের দেয়া সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন। সেইসঙ্গে স্থগিত করেন খালেদা জিয়ার অর্থদণ্ড।

২৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার মামলার নথি নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে এসে পৌঁছানোর পরই আদেশ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

গতকাল রবিবার খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে নথি না আসায় আদালত আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

ঢাকাটাইমস/১২মার্চ/এমএবি/এমআর