নেপাল বেড়াতে গিয়ে না ফেরার দেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই দম্পতি

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৫:০৬

চাঁপাইনাববগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই দম্পতির নেপাল বেড়ানো হলো না। সোমবার নেপালের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানের যাত্রী ছিলেন তারা। চারজনই এ বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

নিহতদের মধ্যে দুজনের বাড়ি গোমস্তাপুর উপজেলায় বেগুন বাড়ি গ্রামে ও অপর দুজনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটি গ্রামে। চারজনই অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী।

চাকরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা অবস্থান করলেও; অবসরের পর তারা রাজশাহীতেই বসবাস করতেন। 

নিহতরা হলেন- গোমস্তাপুর উপজেলার বাংগাবাড়ি ইউনিয়নের বেগুনবাড়ি গ্রামের দম্পতি আকতারা বেগম ও নজরুল ইসলাম ও অপর দম্পতি হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটি গ্রামের বিলকিস আরা বানু ও হাসান ইমাম। তবে হাসান ইমামের দেশের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার আটোয়াড়ী উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। বৈবাহিক ও চাকরিসূত্রে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জেও বাস করতেন।

এদিকে, নজরুল ইসলাম ও আকতারা বেগমের দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে গৃহিনী ও ছোট মেয়ে ডাক্তার।

অন্যদিকে, বিলকিস ও হাসান ইমাম দম্পতির দুই ছেলে কাইসার ইমাম অভি ও তৌকির ইমাম অর্গ দুজনেই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ও তারা কানাডা প্রবাসী। পিতা-মাতার খবর পেয়ে তারা দেশের উদ্যেশে রওনা দেন। 

শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের নিহত আকতারা বেগম পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক। তিনি রাজশাহী মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত গেম টিচার ছিলেন।  

আর গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ির বেগুনবাড়ি গ্রামের নিহত নজরুল ইসলাম রাজশাহী শিল্প ব্যাংকে চাকরি করতেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন।

আকতারা বেগমের ভাগ্নে খালিদ মাহমুদ জানান, চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর খালা-খালু নেপালে বেড়াতে যাচ্ছিলেন কিন্তু তাদের আর বেড়ানো হলো না। তারা চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

তিনি আরো জানান, খালা-খালু রাজশাহীতেই বসবাস করতেন। এ দুর্ঘটনায় আমরা মর্মামত। আত্মীয়-স্বজন এখন লাশের অপেক্ষায়।

অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটি গ্রামের নিহত বিলকিস আরা বানু পেশায় ছিলেন কলেজ শিক্ষক। তিনি গোপালপুর কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক ছিলেন। আর তার স্বামী হাসান ইমাম ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব।

আরো জানা গেছে, নজরুল ইসলাম ও হাসান ইমাম তারা দুইজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবাদে বন্ধু ছিলেন।

বিলকিস আরা বানুর মামাতো বোন, আকতার জাহান আলী জানান, তারা অবসরের পর দীর্ঘদিন ধরেই রাজশাহীতে বসবাস করতেন। তাদের দুই ছেলে কানাডায় চাকরি করেন। আর কিছুদিন বাদেই তাদের বড় ছেলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ছেলের বউ না দেখে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় আমরা খুবই শোকাহত। যতদ্রুত সম্ভব পরিবার কাছে লাশগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা করেন সরকার।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)