রাজশাহীতে প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রচারপত্র প্রস্তুত!

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ০৮ জুলাই ২০১৮, ২১:৫৪

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হবে আগামী মঙ্গলবার। তবে এর আগেই প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীর প্রচারপত্র। মেয়র পদে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হতে যাওয়ায় এই দুই প্রার্থী আগে থেকেই জানেন, কী হবে তাদের প্রতীক। সেই সুযোগটি নিয়ে আগাম প্রচারপত্র প্রস্তুত করে ফেলা হচ্ছে।

তবে প্রতীক বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রচারপত্র ছাপানোর কাজে নামতে পারেননি কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত ফরম অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নগরীর নিউমার্কেট গৌরহাঙ্গা এলাকার বিকল্প অফসেট প্রেসে দেড় লাখ পোস্টার, এক লাখ লিফলেট এবং ১৫ লাখ হ্যান্ডবিল ছাপবেন। অন্যদিকে, বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের ৬০ হাজার পোস্টার, ১০ লাখ লিফলেট এবং তিন লাখ হ্যান্ডবিল ছাপবে নগর ভবন সংলগ্ন গৌরহাঙ্গা এলাকার প্রভাত প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাকলিকেশন্স।

রবিবার সকালে বিকল্প অফসেট প্রেসের ছাপাখানায় গিয়ে দেখা যায়, কর্মীরা হ্যান্ডবিল ছাপাতে ব্যস্ত। এ পর্যন্ত কী পরিমাণ প্রচারপত্র ছাপানো হয়েছে তা জানাতে রাজি হননি প্রেসের ব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী। কবে থেকে প্রচারপত্র ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে তাও জানাতে চাননি তিনি। তবে প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই বিরামহীন প্রচারপত্র ছাপানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন প্রেসের কয়েকজন কর্মী।

এদিকে বৃষ্টি থেকে পোস্টার বাঁচাতে নিউমার্কেট উপহার সিনেমা হল এলাকার মতিন লেমিনেশন হাউজে মেয়র প্রার্থী লিটনের নৌকা প্রতীকের পোস্টার লেমিনেটিং হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আবদুল মতিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, এ পর্যন্ত লিটনের ৪০ হাজার পোস্টার লেমিনেটিং করা হয়েছে। সপ্তাহখানেক সময় ধরেই চলছে কাজ। লিটন ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টার তাদের কাছে আসেনি। নগরীতে তারাই একমাত্র পোস্টার লেমিনেটিং করেন।

নগর ভবন সংলগ্ন প্রভাত প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাকলিকেশনের ছাপাখানায় চলছে ধানের শীষের প্রচারপত্র ছাপার কাজ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত তিন দিন ধরে তারা বুলবুলের প্রচারপত্র ছাপাচ্ছেন। এ তিন দিনে ৩০ হাজারেরও বেশি পোস্টার এবং ৫০ হাজারেরও বেশি হ্যান্ডবিল ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। কতগুলো প্রচারপত্র ছাপানো হবে তা জানাতে পারেননি আমিনুল।

আগেভাগেই প্রার্থীর প্রচারপত্র ছাপানোর কথা স্বীকার করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, অনেক আগে থেকেই প্রচারণার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণে যতটা পোস্টার ছাপাতে পারবো তার প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব প্রচারপত্র রাজশাহীবাসীর কাছে পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি।

তবে ধানের শীষের প্রচারপত্র প্রকাশের খবর নেই বলে দাবি করেছেন মহনগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মতো কোনো কর্মকাণ্ড তারা করবেন না। উল্টো আওয়ামী লীগ বিধি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেন মিলন।

জানতে চাইলে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, আইনে স্পষ্ট বলা আছে, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা করা যাবে না। কাজেই প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থীই প্রচারপত্র প্রস্তুত করতে পারেন না। আমাদের দৃষ্টিতে এগুলো আসেনি।

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়ছেন অ্যাডভোকেট মুরাদ মোরশেদ। তিনি বলেন, দলীয় প্রতীক পাওয়া রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। আইনের অস্পষ্টতার কারণে সুযোগ নিচ্ছেন তারা। এটি নিঃসন্দেহে বৈষম্য। এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেলিং ফিল্ড ব্যাহত হবে।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) আঞ্চলিক সমম্বয়কারী সুব্রত পাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত। আর এজন্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো, প্রতীক নির্দিষ্ট এমন প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করা। প্রার্থীদের আগেভাগে প্রচারপত্র প্রস্তুতের বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্তরায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুলাই/আরআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :