এসডিএফ হলেও ময়লার ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলেনি

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০১৮, ০৮:১৪

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস

বাসা-বাড়ি থেকে সিটি করপোরেশনের আহরণ করা ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার কথা। কিন্তু রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় সংগৃহীত ময়লা ফেলা হয় ট্যানারি মোড় এলাকার বেড়িবাঁধ সড়কের দুই পাশে। এতে ওই সড়কে চলাচলকারী এবং স্থানীয় জনগণের ভোগান্তি দীর্ঘদিনের।

ময়লার ভোগান্তি থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে প্রায় দেড় বছর আগে হাজারীবাগে ময়লা ফেলার ডাম্পিং সেন্টার (এসডিএফ) স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ছয় মাস। কিন্তু উদ্বোধন না হওয়ায় সেই এসডিএফটি কোনো কাজে লাগছে না। কী কারণে এটি উদ্বোধন হচ্ছে সেটাও বলতে পারছেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

এই এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এটার (এসডিএফ) কাজ শেষ হইছে কমপক্ষে ছয় মাস। কিন্তু তারা ময়লা এখনো রাস্তায় ফালায়।’

রাস্তার পাশে কারা ময়লা ফেলে এমন প্রশ্নের জবাবে শহিদুল বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের লোকেরাই ফালায়। বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা আইনা এখানে ফালায়। আবার যার ময়লা ফালানো দরকার আইনা এইখানে ফালাইয়া যায়। এইডা এখন ময়লা ফেলারই জায়গা।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কেবল লোক দেখানোর জন্যই এসডিএফ’টি স্থাপন করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা কাউসার ঢাকাটাইমসকে অভিযোগ করে বলেন, ‘ময়লা নেয়ার হলে ময়লা এখনো রাস্তায় রাখা হয় কেন? এটা দেখানোর জন্য বানানো হচ্ছে। পাবলিকের কী সমস্যা তা তাদের জানার দরকার নাই। কাজ করছে, কিছু লাভ হইছে, তাতেই তারা খুশি। আমাদের কী সমস্যা, আমাদের কী দরকার তা তো তাদের জানার দরকার নাই।’

জানা গেছে, বিভিন্ন ডোবা-নালা পরিষ্কার করে রাতের অন্ধকারে সেই ময়লা ফেলে যায় হাজারীবাগের ট্যানারি মোড় বেড়িবাঁধের পাশে। দীর্ঘদিন ময়লা ফেলার কারণে জায়গাটি পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে। ময়লার বিশাল স্তূপে জন্ম নিচ্ছে মশা। এছাড়া অসহ্য দুর্গন্ধ তো আছেই।

স্থানীয় মুসল্লিদের দাবি, বাতাসের সঙ্গে ময়লার গন্ধ ভেসে আসে মসজিদের ভেতরে। ময়লার দুর্গন্ধে নামাজ আদায় করতে সমস্যা হয় বলে জানান তারা।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সেলিম চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

১৪,১৫ ও ১৮ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর শিরিন গফফার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি। এবিষয়ে আমি সিটি করপোরেশনে কয়েকবার কথা বলেছি। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। এসডিএফ’টি উদ্বোধন না করা পর্যন্ত ‘এসডিএফ’-এর দায়িত্বে থাকা সিটি করপোরেশনের লোকেরা সেখানে ময়লা ফেলতে দিচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোগান্তি তো অনেক। ময়লার গন্ধে এই জায়গা দিয়ে হাঁটাচলাও করা যায় না। আমি এখন আবার সিটি কপোরেশনে কথা বলবো। এখান থেকে সব ময়লা সরিয়ে নিতে হবে এবং এসডিএফ’টি চালু করতে হবে।’

ভোগান্তি নিরসনের জন্য স্থাপন করা এসডিএফ নামক ময়লার ডাম্পিং সেন্টার উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছেন হাজারীবাগে বউবাজার ও ট্যানারি মোড় এলাকার বাসিন্দারা। ময়লাগুলোকে ডাম্পিং সেন্টারে নেয়া হলে অসহ্য দুর্গন্ধের হাত থেকে রক্ষা পাবেন এই পথে চলাচলকারীরাও। তাই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এসডিএফ -এর আশু উদ্বোধন চাইলেন এ অঞ্চলের বাসিন্দারা।

(ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/কারই/জেবি)