যশোরে রক্তের অভাবে মারা গেলেন প্রসূতি
যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্তান প্রসবের কয়েক ঘণ্টা পরই মারা গেছেন প্রসূতি শিমু খাতুন (২৫)। স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অবহেলা এবং সেবিকা ও আয়ার অজ্ঞতায় তার মৃত্যু হয়েছে। তাদের অভিযোগ অস্বীকার করে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে রক্ত জোগাড় করতে না পারায় শিমু খাতুন মারা গেছেন।
নিহতের স্বজনরা জানায়, প্রসব ব্যথা নিয়ে রবিার সন্ধ্যায় শিমু খাতুনকে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তি তাকে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়। জরুরি বিভাগ থেকে দেয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী রোগীর চিকিৎসা সেবা চলছিল। রাতে গাইনী বিভাগের কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলেনি।
পরদিন সোমবার সকালে শিমু খাতুন স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেন। সন্তান প্রসবের সময় দায়িত্বে ছিলেন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা ও আয়া। তখনও কোনো চিকিৎসক আসেনি।
সন্তান প্রসবের পর রোগীর মারাত্মক রক্তক্ষরণ শুরু হয়। খবর পেয়ে সেখানে আসেন গাইনী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুব্রত কুমার বাগচি। কোনোভাবেই শিমু খাতুনের রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। তখন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে।
শিমুর স্বজনেরা ১ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করতে সক্ষম হন। তখন চিকিৎসক ও সেবিকারা রোগীর শরীরে রক্ত না দিয়েই গাড়িতে তুলে দেন যশোর হাসপাতালে নেয়ার জন্য।
নিহতের চাচি শাশুড়ি নাজমা আক্তার জানান, তারা সোমবার সন্ধ্যায় যশোর হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই মারা যান শিমু খাতুন। চৌঁগাছা হাসপাতালের ডা. সুব্রত কুমার বাগচির অবহেলা এবং সেবিকা ও আয়ার অজ্ঞতার কারণে শিমু খাতুনের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করেন তারা।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারলে হাসপাতালের গাইনী বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওয়ার্ডে আনার পর পরই শিমু খাতুনের মৃত্যু হয়। তার চিকিৎসা সেবা দেয়ার কোনো সুযোগ পাননি তারা। রক্তশূন্যতার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক আব্দুর রশিদ জানান, রোগীর অবস্থা খারাপ দেখেই তাকেতাৎক্ষণিকভাবে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়। রক্তক্ষরণ অবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে এনেছিলেন স্বজনেরা।
জানতে চাইলে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সুব্রত কুমার বাগচি বলেন, প্রসূতির অবস্থা খারাপ শুনে তিনি রোগীর কাছে যান। তিনি নিজেও রক্ত ম্যানেজ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয় যশোর হাসপাতালে।
শরীরে রক্তের ব্যাগ দেয়া হয়নি কেনো প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখানে দেরি হতো বলেই রোগীর স্বজনদের বলা হয় যশোরে গিয়ে রক্ত দেন।
(ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/প্রতিনিধি/ওআর)