সিলেটে ব্যালটে বিএনপিকে জবাব দেবেন বহিষ্কৃত নেতা

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৮, ০৮:০৫

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

আরিফুল হক চৌধুরীকে না মেনে সিলেটে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়া বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিম জবাব দেবেন ব্যালটে। বলেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা এই জবাব দিতে মুখিয়ে আছে।

৯ জুলাই সিলেটে দলের প্রবীণ নেতা সেলিম প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় পরদিন তাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। একই দিন তিনি নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে পান বাস। বিএনপি এখনও আশা করছে, সেলিম শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকবেন না। যদিও তিনি বলছেন, শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকবেন আর বিএনপিকে দেখিয়ে দেবেন।

প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর ঢাকাটাইমসের মুখোমুখি হন সেলিম। কথা বলেন তার ভোটে অংশগ্রহণ, দল থেকে বহিষ্কার, আরিফুল হক চৌধুরীকে মেনে না নেয়ার কারণ বিষয়ে।

তাহলে আপনি নির্বাচনে থাকলেন

অবশ্যই। আমি পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচন করব। বাস প্রতীক আমাকে দেয়া হয়েছে। ৩৯ বছরের রাজনীতিতে আমি দলের কোনো সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। এবার আমি আমার দলের নেতাকর্মীর চাপের মুখে মনোনয়ন জমা দিয়েছি। ৩০ জুলাই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে নেতাকর্মীরা ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেবে।

আপনাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলবেন?

দল যা ভালো মনে করেছে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল থেকে অনেকে বলছিলেন এমন সিদ্ধান্ত হবে। এই সিদ্ধান্তে আমার কোনো দুঃখ নেই। আগেই বলেছি আই অ্যাম নট আনহ্যাপি।

দল তো আপনাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছিল।

শুরু থেকে আমাকে নানা মাধ্যমে সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আমি নির্বাচন করার ব্যাপারে অনড় ছিলাম। আজকেও আমাকে বসে যাওয়ার জন্য বলা হয়। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আজকেও আমাকে বলেছেন তুমি নির্বাচন থেকে বসে যাও। আমি তাকে বলেছিলাম, ‘আমার শরীরটা খারাপ, আধা ঘণ্টা সময় দেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানাব।’

বললেন, ‘ঠিক আছে তুমি আধাঘণ্টা সময় নাও’। কিন্তু্ এরমধ্যে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নো প্রবলেম। এতে আই অ্যাম নট আনহ্যাপি। কারণ দল যখন আমাকে মনোনয়ন দেয়নি তখন আমি ৮ তারিখ সংবাদ সম্মেলন করে মহাসচিবের কাছে অব্যাহতি পত্র পাঠিয়েছিলাম। মহানগরেও জমা দিয়েছিলাম। এখন আমাকে বহিষ্কার করা হলো।

এটা তো মুদ্রার এপিট ওপিট। আমি আগেই অব্যাহতি চেয়েছিলাম, এখন বহিষ্কার করা হলো। আমি এটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।

আপনি নির্বাচনে কেন আগ্রহী হলেন?

৩৯ বছর একটি দলের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত। এখন পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় সদস্যও হতে পারিনি। অথচ যারা আমার হাত ধরে রাজনীতি করেছে তারাও এখন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। আমার তো ক্ষোভ, দুঃখ থাকতে পারে তাই না? আর নেতাকর্মীরাও তো চেয়েছেন আমি নির্বাচন করি।

নিজেকে আপনি দল মনোনীত প্রার্থীর থেকে যোগ্য মনে করছেন কেন?

সিলেটে আমাদের যে ছয়জন প্রার্থী হতে আগ্রহী ছিলেন তাদের মধ্যে পাঁচজনই আরিফুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন না দেয়ার জন্য বলেছিলেন। শুধু তাই না প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তোমাকে না দিলে কাকে মনোনয়ন দেয়া যাবে। আরিফুলসহ বাকিরা সবাই আমার কথা বলেছে। তাহলে আমি যোগ্য না? কী বলেন?

আরিফুল হককে মনোনয়ন দেয়ায় আপনার মূল আপত্তি ছিলো কোথায়?

বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পলাতক ছিল। দল থেকে বিভিন্ন সময় সে পালিয়ে গেছে। আমি ১৯৭৮ সাল থেকে এ দলের ভেতরে কাজ করছি। আর সে সবসময় যখন কোনো প্রার্থী দেয়া হতো তার বিরুদ্ধে কাজ করত। লন্ডনে এসব অভিযোগের কথা বলে আমরা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলাম। সে বিএনপি নেতাকর্মীদের ডিস্টার্ব করেন আর সরকারি দলের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।

বিএনপির সঙ্গে আপনার কত দিনের সম্পর্ক?

আই এম দ্য ফাউন্ডার অব বিএনপি। সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ সারা আমার হাতে গড়া সৈনিকরা রয়েছে। আমি ১৯৭৮ সাল থেকে এ দলের ভেতরে কাজ করছি। জিয়াউর রহমানের সময় আমি এই দলের সদস্য হয়েছি।

ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/বিইউ/ডব্লিউবি