খালেদার সাক্ষাৎ পাচ্ছে না স্বজনরা: ফখরুল

গত ১১ দিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ ১১ দিন তার পরিবারের কারোর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এটি নিয়ে তারা কোনো কথা না বলে কারাবিধির অজুহাত দেখাচ্ছে।’

‘গত ১০ দিন খালেদার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে বার বার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। অথচ কারাবিধি অনুসারে, জেল সুপারই এ জন্য যথেষ্ট। কিন্তু জেল সুপারকে বললে তিনি বলেন, আইজি প্রিজনের কাছে যান। আইজি প্রিজনের কাছে গেলে তিনি বলেন, মন্ত্রীর কাছে যান। মন্ত্রীর কাছে গেলে বলেন, এক  নম্বর ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া আমি কিছু করতে পারব না।’

গত ৮ ফেব্রয়িারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর থেকে বেগম খালেদা জিয়া নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী।

কারাগারে গিয়ে দলের নেতা, চিকিৎসক, তার আইনজীবী এবং স্বজনরা কিছুদিন পর পর সাক্ষাৎ করে এসে গণমাধ্যমকে নানা বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন।  

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য যদি সরকারের প্রধানের কাছে অনুমতির জন্য যেতে হয়, তাহলে এটা কি আইনের শাসন? জেলকোড লঙ্ঘন করে খালেদা জিয়াকে তার পরিবার ও বন্ধু এবং রাজনৈতিক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছে না। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার জন্য বিভিন্ন মামলার ফাঁদ পাতা হয়েছে। আর এসব মামলার ফাঁদে ফেলে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। আদালতে এমন হাজার হাজার মামলা পেন্ডিং আছে। অথচ খালেদা জিয়ার জন্য আইন লঙ্ঘন করে আলাদা আদালত গঠন করে দ্রুত সময়ে তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

‘খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার মূল কারণ তাকে এবং বিএনপিকে বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল দীর্ঘায়িত করা। কারণ, তিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন।’

ফখরুল বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। যদিও তিনি মূল মামলায় জামিন পেয়েছেন, কিন্তু অন্য মামলায় তাঁর জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে। যাতে তাকে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা যায়।’

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনাদের শুভচিন্তার উদয় হোক। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। না হলে জনগণের তুমুল জনরোষ থেকে রেহাই পাবেন না। ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।’

এক প্রশ্নের জবাবে খরুল বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি বেগম জিয়াকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র  হচ্ছে কি না।’

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/বিইউ/ডিএম)