রাজশাহীতে আ.লীগের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৮, ১৭:৪৯ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮, ১৭:৫৪

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

রাজশাহীতে জমে উঠেছে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে ভরে গেছে পুরো নগরী। তবে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নৌকা প্রতীকের। আর তাতে নির্বাচনী আচরণবিধি  লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী।

এদিকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকার দোকানে দোকানে, বাসাবাড়িতে গিয়ে ভোটারদের সমর্থন ও ভোট চাইছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ হিসেবে বলা হচ্ছে, পোস্টার-ফেস্টুনে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। অন্য প্রার্থীদের পোস্টার টানানোর মতো কোনো জায়গা রাখা হয়নি। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকছে না বলে দাবি করছেন তারা।

আজ বুধবার বিকালে রাজশাহী সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে বিএনপি। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার টানাতে বাধা দেওয়া, কর্মীদের মারধর, সাঁটানো ফেস্টুন খুলে ফেলা, মাইকে প্রচারকর্মীদের মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী লিটন। তিনি বলছেন, নির্বাচনে পরাজয় হবে বুঝতে পেরে বিরোধী পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বুধবার সকালে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসহ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সাহেববাজার। এখানে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকের ব্যানার-ফেস্টুন নেই। কারও জন্য একটু জায়গাও রাখা হয়নি। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।

বামপন্থী সংগঠন গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদও একই অভিযোগ করেন। আজ সকালে নগরীর সাহেববাজার কাপড়পট্টি এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় তার সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিও উপস্থিত ছিলেন। সাকি বলেন, ‘যেভাবে যত ঘনত্বে মাত্র একজন প্রার্থীর ফেস্টুন শহর ছেয়ে গেছে, তা স্পষ্টতই নির্বাচন আচরণবিধির লঙ্ঘন।’

হাতি প্রতীকের প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ বলেন, জনসংযোগের সময় এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালাচ্ছে। এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে ভোট সুষ্ঠু হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগকে অপপ্রচার অভিহিত করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বড় ও সুসংগঠিত দল। নির্বাচন নিয়ে সব পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি আমাদের আগে থেকেই ছিল। তাই প্রচার শুরুর সাথে সাথেই নগরজুড়ে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টানাতে দলের নেতাকর্মীরা নেমে পড়েন।’

তবে সব এলাকাতেই এখনো ফাঁকা জায়গা রয়েছে জানিয়ে লিটন বলেন, সেখানে চাইলে অন্য প্রার্থীরা ফেস্টুন টানাতে পারেন।

আজ সকালে নগরীর সাহেববাজার আরডিএ মার্কেটে গণসংযোগ করেন লিটন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, ‘পরাজয় নিশ্চিত জেনে শুরুতেই তারা অপপ্রচার শুরু করেছেন।’

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান।  তিনি  বলেন, ‘বিএনপির একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেটি খতিয়ে দেখা হবে। তবে মুরাদ মোর্শেদের কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করতে চাই। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা করব।’

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/মোআ)