ধনী দেশের সমালোচনা, বাংলাদেশের প্রশংসায় গুতেরেস

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৮, ১৮:৪৪ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮, ০৮:৩৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

শরণার্থীদের জন্য দুয়ার বন্ধ করে দেয়ায় পশ্চিমা ধনী দেশগুলোর সমালোচনা করে বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসালেন জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোরিও গুতেরেস।

সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের দেখতে বাংলাদেশ সফর করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। সফর শেষে ফিরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে মঙ্গলবার এক নিবন্ধে এসব কথা বলেন গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব লেখেন, উন্নত দেশগুলো যখন নিজেদের দুয়ার বন্ধ করে দিচ্ছে, তখন মিয়ানেমারে হত্যা-ধর্ষণ ও দমন-পীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত ও হৃদয় দুইই খুলে দিয়েছে।

‘বাংলাদেশের মানুষের মমত্ববোধ ও উদারতা দেখিয়ে দিয়েছে মানবতার সর্বোচ্চ রূপ এবং হাজারো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। কিন্তু এই সংকটের অবশ্যই বৈশ্বিক সমাধান করতে হবে।’

গুতেরেস বলেন, ‘প্রাণ হাতে নিয়ে পালানো মানুষের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের মতো সামনের সারির দেশগুলো যাতে একা হয়ে না যায় তার জন্য জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী বিষয়ে একটি বৈশ্বিক চুক্তি চূড়ান্ত করছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলো পরিস্থিতির উন্নয়নে শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করছে।’

‘কিন্তু দুর্যোগ এড়াতে আরও সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। সেই সঙ্গে শরণার্থী সংকটে বৈশ্বিকভাবে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার যে নীতি তাকেও আরও গুরুত্ব দিতে হবে।’

তবে রাতারাতি শরণার্থী সমস্যার সমাধান হবে না এবং একইভাবে এই পরিস্থিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে দেওয়াও যায় না বলে অভিমত রাষ্ট্রপুঞ্জের এই মহাসচিবের।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের কাছ থেকে হাড় হিম করা খবর শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বলে জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।

‘পিতামাতার সামনে তাদের (রোহিঙ্গা) শিশুদেরকে জবাই করা হয়েছে। তাদের কিশোরী-যুবতী এবং নারীদের দলগতভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের হত্যা এবং নির্যাতন করা হয়েছে। গ্রামগুলি পুড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে।’

‘জাতিগত নিধনের শিকার হওয়া এক ব্যক্তি কান্না করতে করতে বলছিলেন যে, কীভাবে তার বড় ছেলেকে তার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া তার মাকে হত্যা করা হয় এবং তাদের ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর তিনি মসজিদে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয় এবং কুরআন পুড়িয়ে দেয়া হয়। এরকম ভৌতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে তারা প্রায় এক মিলিয়ন শরণার্থী বসবাস করছেন। ’

‘রোহিঙ্গারা বহুদিন ধরেই এমন নির্যাতন ভোগ করে আসছে। তাদেরকে নাগরিকত্ব ও মৌলিক আধিকার থেকে তাদের নিজের দেশ মিয়ানমার বঞ্চিত করেছে।’

ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/ডিএম/ডব্লিউবি