প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তান ভিক্ষা চাইলেন রাশেদের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ জুলাই ২০১৮, ২২:৫৪ | প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০১৮, ২০:৩৬

রিমান্ডে থাকা কোটা আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তার মা সালেহা বেগম। বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একজন মা, আমিও একজন মা। অন্য এক মায়ের (প্রধানমন্ত্রী) কাছে আমার সন্তানকে ভিক্ষা চাইছি।’

বুধবার বিকালে রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলন করে রাশেদের পরিবার।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রাশেদের মা বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) দয়া করে আমার সন্তানকে ক্ষমা করে দেন। আমার বুকের ধনকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেন। আমার আর কিচ্ছু দরকার নেই। আমার রাশেদের চাকরি দরকার নেই। ওকে আমি বাড়ি নিয়ে যাব।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন গত ২৭ জুন এক ভিডিওবার্তায় আবার আন্দোলনে নামার আহ্বানের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ আনেন। বলেন, ‘মনে হয় এটা তার বাবার দেশ।’

প্রধানমন্ত্রীকে এই কটূক্তি করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে ছাত্রলীগ নেতার মামলার পর ১ জুলাই গ্রেপ্তার হন রাশেদ। ২ জুলাই তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ৮ জুলাই আবারও ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে।

রাশেদের মা বলেন, ‘আমি তাকে দেখিনি অনেকদিন। প্রতিদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি। ডিবি অফিসের সামনে বসে থাকি। মঙ্গলবারও ভাগ্যক্রমে ডিবি অফিসে সকাল ১১টায় দেখা হয়ে গিয়েছিল। আমার মনিকে (রাশেদ) দেখে চেনা যাচ্ছে না। ওর শরীর ভালো নেই। রাশেদ আমাকে দেখেই বলল- ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করো, আমাকে যেন না মারে। আমার রিমান্ড যেন তুলে নেয়।’

‘কথা বলতে বলতেই পুলিশ ওকে নিয়ে চলে গেল। হাঁটতে হাঁটতে এক মিনিট কথা হয়েছে।’

রাশেদ কোনও রাজনৈতিক দল বা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় দাবি করে তার মা বলেন, ‘রাশেদ শুধু চাকরির জন্য দাবি করেছিল, কোটা কমানোর জন্য আন্দোলন করছিল। ও-তো কোনও অপরাধ করেনি। তারপরও ওকে এমনভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার আর চাকরি দরকার নেই। আমার মনিকে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা করে দিলে আমি ওকে বাড়ি নিয়ে যাব। ওকে আর কোনোদিন আন্দোলন করতে দেব না।’

নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে রাশেদের মা বলেন, ‘আমি পরের বাড়িতে কাজ করে আমার মনিকে লেখা পড়া শিখাইছি। ওর আব্বা লোকের জমিতে কামলা দিয়ে বহু কষ্টে সংসার চালিয়েছে। ওর আব্বার পেটে পাথর জমেছে।’

রাশেদের বোন সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘‘আমার মা একটু্ও ঘুমায় না। তার যে কখন কী হয়, জানি না। তার শরীরের অবস্থাও ভালো না। আমার আব্বার অবস্থাও খুব খারাপ।’

‘আপনারা আমাদের গ্রামে খোঁজ নেন, কেউ বলতে পারবে না আমার ভাই এবং আমরা কেউ জামাত শিবিরের সঙ্গে জড়িত। আমার ভাই শুধু একজন ছাত্র। তার কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।’

রাশেদের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেন, ‘আমরা মানবাধিকার কমিশনে গিয়েছিলাম সাহায্যের জন্য। তারা জানিয়েছে— অনেকগুলো মামলা তার বিরুদ্ধে হয়েছে, সময় লাগবে। আইনজীবীরাও একই কথা বলেন। আর কয়েকদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেছেন— বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বিষয়ে কোনও দায়িত্ব নেবে না। ফলে আমরা আর তার কাছে যাইনি। তবুও তার কাছে আমাদের অনুরোধ, আমার স্বামী তো কোনও অপরাধ করেনি। হাজার হাজার শিক্ষার্থী তা জানে। তাহলে তাকে এভাবে কেন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে?’

ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/ডিএম/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :