খালেদার আইনজীবী কার্লাইলকে ঢুকতে দেয়নি ভারত

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০৮:৫৭ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮, ০৯:১৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড আলেকজান্ডার কার্লাইলকে ভারত প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। বুধবার রাতে তাকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্লাইল বুধবার গভীর রাতে দিল্লী বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। তখন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাকে জানায় যে, ভারত সরকার তার ভিসা প্রত্যাহার করেছে। এরপর তাকে দিল্লীর বিমানবন্দর থেকেই লন্ডনের ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার দিল্লীতে একটি পাঁচতারা হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন লর্ড কার্লাইলের সেই সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে বলে তার মিডিয়া টিম থেকে জানানো হয়েছে।

বিবিসির সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ এই আইনজীবী লর্ড কার্লাইল এর দিল্লি সফর নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছিল।

দিল্লি ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব তার শুক্রবারের নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল দেয়ার পরও তিনি দিল্লিতে একটি পাঁচতারা হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা পেয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা কেন ‘সাজানো’ এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, সেটাই কার্লাইলের সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা করার কথা ছিল বলে তার মিডিয়া টিম থেকে জানানো হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত লর্ড কার্লাইল ভারতে ঢুকতে পারেননি।

পোল্যান্ড থেকে যুক্তরাজ্যে অভিবাসিত ইহুদি আইনজীবী লর্ড কার্লাইল বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের কঠোর সমালোচক ছিলেন। তিনি এই বিচারের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে নানা সভা, সেমিনার এবং ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে দূতিয়ালির চেষ্টা করেছেন।

২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‘নিরপেক্ষতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার’ জন্য আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি জানান লর্ড কার্লাইল। জেনেভাস্থ ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস-এর হাই কমিশনার নাভী পিল্লাই বরাবর লিখিত এক চিঠিতে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপও চেয়েছিলেন লর্ড কার্লাইল।

আলবদর নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর না করার দাবিতে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের কাছে চিঠিও লিখেছিলেন কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের চেয়ারম্যান কার্লাইল।

২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশে ‘গ্রহণযোগ্য’ সরকার গঠনে উদ্যোগ নিতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অনুরোধ করেছিলেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের এই সদস্য।

উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের স্বাধীন পর্যবেক্ষক হিসেবে প্রায় এক দশক কাজ করা এই আইনজীবী ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের সাবেক প্রধান জন স্কারলেটের সঙ্গে মিলে এসসি স্ট্র্যাটেজি লিমিটেড নামে একটি পরামর্শ সেবা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, যা বছর তিনেক আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় আসে।

ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/একে/এমআর