অগ্রাধিকার জনগণের, এসএসএফকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৮, ১৪:৪৪ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮, ১৮:০৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

 

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে জনগণ থেকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন হতে চান না বলে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স এসএসএফকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাহিনীটির ৩২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রবিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন সরকার প্রধান।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে এসএসএফ। তাদের কঠোর নজরদারি এড়িয়ে তাদের কাছে পৌঁছা কঠিন।

প্রথানমন্ত্রী এসএসএফের প্রশংসা করে বলেন, তারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে। কিন্তু কড়াকড়ির কারণে মাঝেমধ্যে তিনি রাগও করেন। তারপরও এতটুকু বিচ্যুতি হতে দেয় না এসএসএফ সদস্যরা।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে আমরা রাজনীতিক, জনগণকে নিয়েই আমাদের কাজ। তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমাদের চলে না।’

‘জনগণই সব ক্ষমতায় উৎস। তাদের জন্যই আমরা। সুতরাং তাদের দিকটি সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারে রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জীবনে কিছুই চাইনি। চেয়েছি শুধু দেশের মানুষের ভাগ্যেন্নয়ন। বঙ্গবন্ধু যে দেশটি আমাদের দিয়ে গেছেন সেদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চেয়েছি। সবাই যেন সুখ-শান্তিতে থাকতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে চেয়েছি।’

‘সরকার প্রধান হিসেবে আমার কোনো বিলাসবহুল জীবন যাপন, অথবা কোনো কিছু চাওয়া পাওয়া আমার নেই। আমার একটাই চাওয়া দেশের মানুষের উন্নতি, মানুষের কল্যাণ। মানুষের জন্যই আমার কাজ। যে মানুষের জন্য কাজ করি সে মানুষগুলো থেকে যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই তাহলে কিন্তু আমাদের জীবনটা অর্থহীন হয়ে যাবে। এই যোগাযোগটা যেন থাকে।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরে আনার কথাও তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘দেশের মানুষের ভালোবাসাই আমাকে নিয়ে এসেছে।’

‘আজকে দেশের সর্বত্র উন্নয়ন চোখে পড়ছে। তৃণমূলে উন্নয়নে ছোঁয়া নিশ্চিত করতেই আমরা কাজ করছি। সবাই যেন উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করতে পারে সেদিকেই আমাদের দৃষ্টি।’

‘জাতির জনকের শাহাদাতের পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ-জাতি হিসেবে পরিচিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে মর্যাদাসম্পন্ন দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা করেছি।’

‘বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ভিক্ষুকের জাতির কোনো মর্যাদা নেই। তাই আমরা ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে হাত দিই। দেশের মর্যাদা বৃদ্ধির দিকে মন দেই। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মর্যাদাসম্পন্ন দেশ হিসেবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে। আজকে বাংলাদেশের উন্নতি দেখে বিশ্ববাসী অবাক হয়। এত অল্প সময়ে কীভাবে বাংলাদেশ এতদূর গেল সেটি এখন বিশ্ববাসীর মুখে মুখে। আমাদের আন্তরিকতা ছিল বলেই দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী তার শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধের মীমাংসা, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফেরাতে চুক্তি করাসহ নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

বলেন, পরে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের কাজগুলো এগিয়ে নিতে পারেইনি বরং থামিয়ে দেয়। ভারতের সঙ্গে আলোচনার ভয়ে তারা পিছু হটে।

বহু চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যেতে হচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশকে উন্নত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বলেন, আরাম আয়েশে জীবন যাপন করতে চান না তিনি। জনগণের আরামের কথা চিন্তা করেই দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন।

‘অনেক সময় আমরা অনেক কথা বলি। কিন্তু তাদের ছকে বাঁধা যে দায়িত্ব তা থেকে তাদের এক চুলও নড়াতে পারি না। মাঝে মধ্যে একটু রাগও করি।’

বলেন, ‘এটাও ঠিক আমরা রাজনীতি করি, গণমানুষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ। এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে তাদের সঙ্গে এই যোগাযোগটা যেনো বিচ্ছিন্ন না হয়। এই কথাটা সবসময় বলি।’

ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/ডিএম/ডব্লিউবি