মিয়ানমারের আচরণে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৮, ২১:০৯ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮, ২২:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের আচরণে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বারবার কথা দিয়েও প্রত্যাবাসন শুরু না করার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সংকটের সমাধান চাই বলে মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপ চালাচ্ছি, কিন্তু মিয়ানমার সব কিছুতে রাজি থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা কোনো কিছুই করছে না।’

রবিবার রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস অ্যাডভোকেসি অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডিকে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কেরি কেনেডি। 

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, তারা মূলত রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েই আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা। সাধারণ মানুষ তাদের চাষাবাদের জমি, গাছপালা, বনভূমি হারিয়ে ক্ষতির সন্মুখীন হলেও তারা স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে।’

‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জনগণও এমন দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়েছিল। তাই আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি।’

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। ৮০ দশক থেকেই নানা সময় সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশের দিকে তারা ছুটে এসেছে। তবে গত বছর আগস্টের পর সবচেয়ে বড় স্রোতটা শুরু হয়। এখন কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

রোহিঙ্গাদেরকে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি ও একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে মিয়ানমার। ২০ জানুয়ারি থেকে প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন দেশটির কর্মকর্তারাই। কিন্তু তাদের অযুহাতের শেষ নেই। নানা সময় বাংলাদেশের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে যাচাইবাছাইয়ের নামে সময়ক্ষেপণ করছে তারা। আবার তালিকায় থাকা সবাইকে রাখাইনের বাসিন্দা হিসেবেও স্বীকার করছে না তারা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে নিবন্ধন করার পর পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে আরো ভালো অবস্থায় বসবাস করতে পারে সেজন্য সরকার নতুন জায়গার ব্যবস্থা করছে।

কেরি কেনেডি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, রোহিঙ্গা জনগণের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করাই হচ্ছে তাঁর বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য।

‘আমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যও পরিদর্শন করেছি, কিন্তু সেখানে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে কোন অবকাঠামো বা কোন আশ্রয়ের ব্যবস্থা দেখিনি।’

মিয়ানমার প্রত্যাবর্তনে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে কেনেডি বলেন, ‘তাদের নিরাপত্তা দেয়া এবং তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাজ করা উচিত।’

কেরি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (এসএসএন) কর্মসূচি ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/ডিএম/ডব্লিউবি