ব্যতিক্রমী এক ফাইনাল

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৮, ০৯:০৬ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮, ১২:২১

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

শেষ হলো এক মাসের বিশ্ব কাঁপানো ফুটবল উৎসবের। বিশ্বসেরা হওয়ার এই প্রতিযোগিতায় ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্ন ভেঙে দ্বিতীয়বারের মত সোনালী শিরোপা জিতলো ফ্রান্স। কিন্তু বিশ্বকাপের ইতিহাসে লুজনিকির মাঠে এক ব্যতিক্রমী এক ফাইনাল দেখলো গোটা ফুটবল বিশ্ব।

রুশ বিশ্বকাপের এই ফাইনালে কোন কিছুরই কমতি ছিলো না। যেমন –গোল উৎসবের ম্যাচ, প্রথম আত্মঘাতী গোল, ভুল সিদ্ধান্ত, গোল রক্ষকের হাস্যকর ভুল,দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে কারো গোল করা সব মিলিয়ে এ ছিলো ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী একটি ফাইনাল।

এক নজরে রুশ বিশ্বকাপের ফাইনাল-

অনেক গোলের ম্যাচ-

রবিবার ফাইনাল ম্যাচটিতে দুই দল মিলে গোল করেছে ছয়টি। যেটা ছিলো সব বিশ্বকাপ ফাইনাল থেকে আলাদা। কারণ সাধারণত দেখা যায় ফাইনালের মত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ গুলোতে অনেক স্নায়ু উত্তেজনা থাকে। এমন ম্যাচে খেলোয়াড়দের উপর থাকে বাড়তি চাপ। যার কারণে এমন ম্যাচে কম গোল হয়। কিন্তু গতকালকের ফাইনাল ছিলো তার উল্টো।  

স্মরণীয় এ ম্যাচে ফ্রান্স ৪-২ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে বিশ্ব ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচে দুটির বেশি গোল হয়েছিল। আর ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে সর্বমোট সাতটি গোল হয়েছিল। সেই বিশ্বকাপে ৫-২ গোলের ব্যবধানে সুইডেনকে হারিয়েছে ব্রাজিল।

ভিএআর নিয়ে বিতর্ক

এই বিশ্বকাপের শুরু থেকেই বিতর্ক ছিলো ভিএআর প্রযুক্তি নিয়ে। এই আসরেই এই প্রযুক্তির প্রথম ব্যবহার করা হয়েছে।

গ্রুপ পর্যায়ে এ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলেও নক পর্যায়ে এটি তেমন একটা ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে ফ্রান্সকে পেনাল্টি দেবার জন্য ভিএআর ব্যবহার করা হয়েছে। ফ্রান্সের কর্নার থেকে ক্রোয়েশিয়ার ইভান পেরিসিচ-এর হাতে যখন বল লাগে তখন রেফারি পেনাল্টি দেননি। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিসটেন্স রেফারির সাহায্যে পরে সেটা দেন। যেটা নিয়ে খুব বিতর্ক ছড়িয়েছে।

এমন পেনাল্টি নিয়ে ক্রোয়াট কোচ দালিচ বলেন,‘আমি পেনাল্টি সম্পর্কে শুধু একটা বাক্য বলতে চাই-বিশ্বকাপের ফাইনালে এমন একটা পেনাল্টি আপনি দিতে পারেন না।’

ফাইনালে প্রথম আত্মঘাতী গোল

রাশিয়া বিশ্বকাপে মোট ১২টি আত্মঘাতী গোল হয়েছে। যার মধ্যে ফাইনাল ম্যাচে হয়েছে একটি। ফ্রান্সের অ্যান্টনি গ্রিজম্যানের ফ্রি-কিক থেকে ক্রোয়েশিয়ার মারিও মানজুকিচের মাথায় লেগে বল জড়ায় ক্রোয়েশিয়ার জালে।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি প্রথম ফাইনালের আত্মঘাতী গোল।

পেলের পর ফাইনাল ম্যাচে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা

সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে গোল করেছেন প্রান্স তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। এর আগে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে গোল করার কীর্তি ছিলো ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির পেলের। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

তাছাড়া বিশ্বকাপের মাঝপথে পেলের পর প্রথম টিনেজারের রেকর্ডও গড়েছেন ১৯ বছর বয়সী এমবাপ্পে।

গোল রক্ষকের হাস্যকর ভুল

ফ্রান্স গোল রক্ষকের হাস্যকর ভুলের কারণে একটি গোল পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। ডিফেন্ডার স্যামুয়েল যখন গোল রক্ষকের কাছে বল দেন তখন তার পেছনে অনেক দুর থেকেই ছুটে যান ক্রোয়েশিয়ার মানজুকিচ।

বলটি দ্রুত মাঝ মাঠ ঠেলে না দিয়ে ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিস খুব আয়েশি ভঙ্গিতে মানজুকিচকে পাশ কাটিয়ে যেতে চান। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। মানজুকিচের পায়ে বল লেগে গোলের দেখা পেয়ে যায় ক্রোয়াটরা।

মাঠের ভেতরে লোক ঢুকে পড়া

রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালের ম্যাচের শেষে অনেক দর্শক মাঠে ঢুকে যায়। পুরো আসর ভালো ভাবে কাটলেও শেষ দিনে এমন কান্ড ছিলো অবাক করার মত। এই প্রথমই এমনটা হয়।-(বিবিসি)

(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/এইচএ)