আশিভাগ শিক্ষার্থীর হাতে ইন্টারনেট মোবাইল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ জুলাই ২০১৮, ১৮:৪৯ | প্রকাশিত : ১৬ জুলাই ২০১৮, ১৮:২৩

স্কুল পড়ুয়া আশিভাগ ছাত্রছাত্রী ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভলপমেন্ট (সাকমিড)। ঢাকা মহানগরী ও টঙ্গীর ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওপর জরিপ করে এ তথ্য পেয়েছে সাকমিড। কিশোর এবং তরুণরা কোনো পূর্বপ্রস্ততি ছাড়াই ইন্টারনেটের মতো ব্যাপক একটি জগতে প্রবেশ করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে বলেও সতর্ক করেছেন গবেষকরা।

সোমবার সকালে রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এক গোল টেবিল বৈঠকে এসব কথা বলা হয়। ঢাকা মহানগরীর মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের গণমাধ্যম স্বাক্ষরতা যাচাই ও জরিপে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে এই বৈঠক হয়। সরকারের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও নেদারল্যান্ড ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড বৈঠকটি আয়োজনে সহযোগিতা করে।

বৈঠকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮০.৩ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। তাদের সংবাদ গ্রহণ করার মাধ্যমগুলোর মধ্যে ফেসবুক ৩২.৩ শতাংশ, ইউটিউব ২২.৬ শতাংশ, সংবাদপত্র ৩৫.৪ শতাংশ, টেলিভিশন ৪৯.৫ শতাংশ, রেডিও ৬.৪ শতাংশ, অনলাইন পোর্টাল ১৯ শতাংশ এবং অন্যের মুখ থেকে শোনা ৩৮.৭ শতাংশ। মহানগরী ও টংগীর ১৬টি বিদ্যালয়ের ৫০০জন ছাত্রছাত্রীর উপর জরিপটি পরিচালিত হয়।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, শতকরা ৬৫ ভাগ শিক্ষার্থীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাদের মধ্যে ৭২ ভাগ শিক্ষার্থীর ফেসবুক এবং ৪৭.৫ ভাগ শিক্ষার্থীর ইউটিউব অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

গোলটেবিল বৈঠকে অবাধ তধ্য প্রবাহ ও গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশের প্রেক্ষিতে দেশের মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে গণমাধ্যম সাক্ষরতা কার্যক্রম চালু করার আহবান জানানো হয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়, গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এই অবাধ বিচরণকে কাজে লাগিয়ে তাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এ লক্ষে সরকার, গণমাধ্যম, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন সাকমিড এর ডেপুটি ডিরেক্টর সৈয়দ কামরুল হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাকমিড এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আফিয়া পিনা এবং গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর সহযোগী প্রফেসর ড. সরকার বারবাক কার্মাল।

বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তিগত সেবাকে জনগণের কাছে পৌছে দিতে বিগত এক দশক ধরে ব্যাপকভাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে জনগণ তার সুফল পেতে শুরু করেছে। দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়েছে। তবে আশংকার বিষয় হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যত বর্তমানের কিশোর এবং তরুণরা কোনো পূর্বপ্রস্ততি ছাড়াই ইন্টারনেটের মতো ব্যাপক একটি জগতে প্রবেশ করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে।

তারা বলেন, এই জরিপের ফলে মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের তথ্য ও সংবাদের সংবেদনশীলতা, সংবাদ বিশ্লেষেণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যকর ব্যবহার এবং ইন্টারনেট জগত স¤পর্কে পরিচিতি হতে সক্ষম হবে।

গোলটেবিল বৈঠকে জানানো হয়, সাকমিড ইতোমধ্যে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম-১০ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকসমূহ পর্যালোচনা করেছে। ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম-১০ম শ্রেণির আইসিটি এর বিষয়বস্তর পাশাপাশি এই বিষয়গুলো স¤পর্কে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীগণ অবগত থাকলে শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশপ্রেমিক, উন্নত বুদ্ধিস¤পন্ন সুনাগরিক হিসাবে গড়ে উঠবে। এর ফলে মানস¤পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি দক্ষ, কর্মমুখী ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের কাজ ত্বরান্বিত হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন ‘শিক্ষার্থীদের জীবনকে ভালোবাসাতে শেখাতে হবে এবং তাদের সুবিবেচনা বোধকে জাগাতে হবে। তথ্য নিতে গিয়ে যাতে অতথ্য তাদের মধ্যে প্রবেশ না করে সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।’

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাকমিড এর বোর্ড সদস্য নজর-ই-জিলানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান। বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম বিভাগের প্রধান ড. জুড উইলিয়াম হেনিলো, জাতীয় কারিকুলাম ও টেক্সট বুক বোর্ডের সদস্য (প্রাথমিক) প্রফেসর এ কে এম রেজাউল হাসান, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের এডুকেশনাল টেকনোলোজি এক্সপার্ট মো. রফিকুল ইসলাম সুজন, ইউনেস্কোর এডুকেশন বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক মনিনুর রশিদ, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি কে এম শহীদুল হক, র্ব্যাক কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্র মতামত প্রদান করেন।

ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/এসআর/এসটিএস/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :