রাশিয়ার পক্ষ নেয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৮, ১৬:৩৩ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮, ১৬:৩৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে কথা বলায় যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর বিবিসির।

সোমবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক শীর্ষ বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ নিয়ে ট্রাম্প কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে রাশিয়ার মাথা ঘামানোর কোনো কারণ নেই।’ তার এ মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেয়া তথ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য হাউস স্পিকার পল রায়ান বলেছেন, ‘রাশিয়া আমাদের মিত্র নয়, ট্রাম্পকে এটি বিবেচনায় রাখতে হবে।’

প্রেসিডেন্টের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ড্যান কোটস এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে ‘চলমান ব্যাপক প্রচেষ্টার’ জন্য রাশিয়া দায়ী।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।   

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সমর্থনের পাল্লা হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে নেয়ার একটি উদ্যোগের পেছনে রাশিয়ার ভূমিকা ছিল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চালানো সাইবার হামলা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে এ কাজ করেছিল তারা।

রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে ‘অশোভন কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।

হেলসিংকির প্রেসিডেন্ট প্রসাদের একটি কক্ষে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে কথা বলেন বিশ্বের প্রভাবশালী এই দুই নেতা। রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকের সময় দোভাষী ছাড়া আর কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

বৈঠকের পর এক যৈাথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করা হয়, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগের বিষয়ে তিনি তার নিজের গোয়েন্দা সংস্থা না রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বিশ্বাস করবেন।

উত্তরে ট্রাম্প বলেন,  ‘রাশিয়া এটি কেন করবে তার কোনো কারণ দেখি না আমি। রাশিয়া এটি করেনি বলে জোরালোভাবেই জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।’

ক্রেমলিনের নেতাকে বিশ্বাস না করে গোয়েন্দা  সংস্থাগুলোকে  বিশ্বাস  করার কোনো  কারণ  নেই বলে  জানান ট্রাম্প।

এ সময় রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল সম্পর্কের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিগত প্রশাসনকে দায়ী করেন তিনি।

এর সমালোচনা করে কঠোর ভাষায় দেয়া এক বিবৃতিতে স্পিকার রায়ান বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কোনো নৈতিক সমতা নেই, দেশটি আমাদের মৌলিক মূল্যবোধ ও আদর্শের প্রতি শত্রুভাবাপন্নই রয়ে গেছে।’

২০১৬-র নির্বাচনে মস্কো প্রভাব বিস্তার করেছিল, এতে ‘কোনো প্রশ্ন’ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সিনেটর ম্যাককেইন বলেছেন, ‘এটি একটি অশোভন কাজ।’

নিজের বিবৃতিতে ম্যাককেইন বলেছেন, ‘কোনো স্বেচ্ছাচারী শাসকের সামনে নিজেকে এতটা শোচনীয়ভাবে নিচে নামাননি আগের কোনো প্রেসিডেন্ট।’

ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামও ট্রাম্পের সমালোচনা করেছে।

এক টুইটে গ্রাহাম বলেছেন, ‘২০১৬ সালে হস্তক্ষেপ করার বিষয়ে রাশিয়াকে শক্তভাবে দায়ী করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেল।’

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এসআই)