দৌলতদিয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত, ট্রাকের দীর্ঘ সারি

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৮, ১৮:৩৪

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পদ্মায় স্রোত বেড়ে যাওয়ায় ও ফেরি স্বল্পতার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় সময় লাগছে প্রায় দ্বিগুণ। আগে যেখানে লাগতো ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট, বর্তমানে সেখানে লাগছে প্রায় ৫০ মিনিট।  

দৌলতদিয়ায় বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি পড়েছে। এদিকে পদ্মা নদী উত্তাল থাকায় শনিবার বেলা ১১টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায়  যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ায় ফেরিতে যাতায়াত করছে।

বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, যাত্রীদুর্ভোগ কমাতে বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করায় ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকে পড়েছে বেশি।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি ফেরির মধ্যে তিনটি ফেরি বিকল হয়ে আছে। সেই সঙ্গে আরও দুটি ফেরি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথে ফেরির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে পারাপার ব্যাহত হওয়ায় আজ শনিবার সকাল থেকেই  দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে পড়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ শত শত গাড়ি। এতে টার্মিনালের পার্কিং ইয়ার্ড উপচে ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ পর্যন্ত চার কিলোমিটার ফোরলেন রাস্তার এক পাশে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ। বছরজুড়েই বিভিন্ন সংকটের কারণে উভয় ঘাটে যানজট লেগে থাকে। তবে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ফেরি সার্বক্ষণিক সচল থাকায় ঈদের পর থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ২৪ দিন যানজটমুক্ত ছিল। এতে উভয় ঘাটের চিত্র অনেকটা পাল্টে গিয়েছিল। কিন্তু চলাচলকারী ওই ফেরিগুলোর মধ্য থেকে তিনটি ফেরি হঠাৎ বিকল হয়ে পড়ায় এবং আরও দুটি ফেরি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ফেরির সংকট সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ঈদুল ফিতরের সময় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে ছোট-বড় মোট ২০টি ফেরি চলাচল করতো। কিন্তু ঈদের কয়েকদিন পর যান্ত্রিক ক্রটি দেখা দেওয়ায় সংস্কারের জন্য এই রুট থেকে নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয় রোরো ফেরি ‘ভাষা শহীদ বরকত’ ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান। এর কয়েক দিন পরই ডক ইয়ার্ডে পাঠানো হয় ‘কুসুম কলি’ এবং সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ‘ঢাকা’ নামক আরেকটি ফেরিকে পুনর্বাসনের জন্য ডক ইয়ার্ডে পাঠানো হয়। এছাড়া রোরো ফেরি শাহ জালালকে গত বৃহস্পতিবার মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথে পাঠানো হয়। ২০টি ফেরির মধ্যে চারটি অন্যত্র থাকায় এই নৌপথে ফেরি সংকট দেখা দেয়। এই অবস্থায় বাকি অতিপুরাতন ১৫টি ফেরির মধ্যে মাঝে মধ্যে দুই-তিনটি  ফেরি যান্ত্রিক ক্রটিতে বিকল হয়ে পড়ছে। পদ্মা উত্তাল ঢেউ ও তীব্র স্রোত থাকায় ওই ফেরিগুলো ফুল লোডে নদীতে চলতে পারছে না। ফলে বর্ষা ও ঈদ মওসুমে দৌলতদিয়য়া-পাটুরিয়া ঘাটে যানজট হবে এটাই চিরাচরিত নিয়মে পরিণত হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক রুহুল আমীন বলেন, দফায় দফায় ফেরি বিকল হয়ে পড়ায় গাড়ি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)