রাজশাহীতে বোমা হামলা: বিএনপি নেতার স্বীকারোক্তি

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০১৮, ১৪:২০ | আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮, ১৮:২৪

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
মতিউর রহমান মন্টু

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারে পথসভায় বোমা হামলার দায় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু।

গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মণ্টু সব খুলে বলেছেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।

রবিবার দুপুরে নিজের দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি জানান, এই বোমা হামলাটি যে তাদের লোকজনই করেছিল, সেই ঘটনাটি মণ্টু মুঠোফোনে দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুকে জানিয়েছেন। আর এই কথাটিও স্বীকার করেন তিনি।

গত ১৭ জুলাই বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় পথসভার বোমা হামলা হয়। চারটি মোটরসাইকেলে আটজন যুবক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরপর তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যান।

এ ঘটনার দুই দিন পর তাইফুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন মতিউর রহমান মন্টু। শনিবার রাতে তাদের সেই কথোপকথনের অডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। ওই অডিওতে শোনা যায়, বিএনপি নেতা মন্টু কেন্দ্রীয় নেতা টিপুকে জানাচ্ছেন, ভাইয়ার (তারেক রহমান) কাছে ক্রেডিট নেয়ার জন্য এই হামলা চালানো হয়েছে যাতে জড়িত তার দলের লোকজনই।

এরপর শনিবার রাতে মন্টুকে তার বাসা থেকে আটক করা হয়। আর দুপুরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকে পুলিশ।

বিএনপি নেতা মন্টু ও টিপুর কণ্ঠ কীভাবে নিশ্চিত হওয়া গেল, এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, ‘মন্টু নিজেই স্বীকার করেছেন যে কথোকপথনটি তাদের। তাছাড়া এই ঘটনায় দলের নেতাকর্মীরাই জড়িত বলেও তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। মন্টু পরিচিত মানুষ। কণ্ঠটা আপনারা (সাংবাদিকরা) নিজেরাও বুঝতে পারছেন নিশ্চয়।’

বিএনপির পথসভায় বোমা হামলায় বাংলাভিশনের সাংবাদিক পরিতোষ চৌধুরী আদিত্যসহ দুইজন আহত হন। এ ঘটনার জন্য বিএনপি দায়ী করে আওয়ামী লীগকে। তবে ঘটনার দিনই সংবাদ সম্মেলন করে মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নিজেরাই এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।

লিটন সেদিন দাবি করেন, ঘটনার আগের দিন লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর দীর্ঘ সময় কথা হয়। তারেকের পরিকল্পনায় দুলু এই বোমা হামলার ঘটনা ঘটান। এ সময় লিটন তার গ্রেপ্তারও দাবি করেন।

এ নিয়ে জানতে চাইলে আরএমপি কমিশনার বলেন, ‘মন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বোমা হামলার পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা এবং যারা ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। মামলার তদন্ত কাজও চলবে, আসামিরাও গ্রেপ্তার হবে।’

বিএনপির পথসভায় বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশ অজ্ঞাত আটজনকে আসামি করে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে। তখন পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলে যে আটজন গিয়ে সরাসরি হামলায় অংশ নেন, তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে হিমেল নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে তার পাঁচদিনের রিমান্ডেরও আবেদন করা হয়েছে। তবে আবেদনের শুনানি হয়নি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, বিএনপি নেতা মন্টুকে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলাটিতেই গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রয়োজনে তার রিমান্ডেরও আবেদন করা হবে।

ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/আরআর/ডব্লিউবি