স্বস্তির জয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ জুলাই ২০১৮, ০৪:১৫ | প্রকাশিত : ২৩ জুলাই ২০১৮, ০৩:৫৯

৪৩, ১৪৪, ১৫৯, ১৬৮। সদ্য শেষ হওয়া দুই টেস্টের চার ইনিংসে বাংলাদেশের রান। কিন্তু শুধু টেস্ট ফরম্যাট দিয়ে টাইগারদের বিচার করলে বড্ড অবিচার হবে! ওয়ানডেতে বাংলাদেশ আসলেই শক্তিশালী, সেটা আবারও দেখা গেল। টেস্টে বিবর্ণ হলেও ওয়ানডেতে সেই চেনা বাংলাদেশকে দেখা গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানাতেও।

ব্যাট বলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। তামিমের বড় সেঞ্চুরি, মাশরাফির ৪ উইকেট। সাকিবের ৯৭, মুশফিকের ১১ বলে ৩০। আর তাতেই প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের ৪৮ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।

প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২৭৯। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩১ রানে থামে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২৮০ রান বড় টার্গেট। তবে গেইল, আন্দ্রে রাসেলের মতো ব্যাটসম্যানরা দলে। উইকেটও ব্যাটিং সহায়ক। তাই জয়ের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশের জন্য সহজ ছিল না। গেইল লুইস মিলে বিধ্বংসী শুরু না করলেও আস্থার সঙ্গে ব্যাট করছিলেন প্রথম দিকে।

কিন্তু সেই আস্থায় চিড় ধরতে সময় লাগেনি। কারণ বল হাতে দারুণ বোলিং করেছেন মাশরাফি, মিরাজ এবং মুস্তাফিজ। বিশেষ করে অধিনায়ক মাশরাফি।

গত কয়েক বছর ধরে তিনিই দলের সেরা পেসার। মাশরাফির হাত ধরেই বারবার ভাইটাল ব্রেক থ্রু আসছে। এ ম্যাচেও মাশরাফির বলে ওপেনিং জুটি ভাঙলো বাংলাদেশ। ধীরে ধীরে চিন্তার কারণ হয়ে উঠছিলেন দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও এভিন লুইস।২৭ রানে এই লুইসকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যাচে পরিণত করান মাশরাফি। এরপর ৬ রানে হোপকে এলবি করেন রুবেল।

এরপর গেইলের পালা। আম্পায়ারের সৌজন্যে একবার এলবি থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে ৪০ রানের মাথায় অযথা রান নিতে গেলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-মোসাদ্দেকের দারুণ যৌথ প্রচেষ্টায় রান আউট হয়ে যান বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এ মারকুটে ব্যাটসম্যান। গেইলের পর জেসন মোহাম্মদকে ১০ রানে বিদায় করেন মিরাজ। ব্যস, ম্যাচের লাগাম চলে যায় মাশরাফিদের হাতে।

পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথমে ৩৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দারুণ খেলতে থাকা হেটমেয়ারকে ৫২ রানে বিদায় করে দলে স্বস্তি এনে দেন ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করতে থাকা মুস্তাফিজ। ওভারের তৃতীয় বলে রোভম্যান পাওয়েলকে ১০ রানে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন কাটার বয়। এরপর মাশরাফির আঘাত। ১৭ রানে জেসন হোল্ডারকে বিদায় করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান ম্যাশ। একটু পরেই নার্সকে ৭ রানে আউট করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শেষ দিকে বেশ ঝড়ো ব্যাটিং করেন জোসেফ ও বিশু। ৫৯ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন তারা। কিন্তু শেষমেশ ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩১ রান করতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বোলিংয়ে সেরা মাশরাফি। ১০ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। মিরাজ ১০ ওভারে ৩৭ রানে পেয়েছেন এক উইকেট।

এরআগে তামিমের অপরাজিত ১৩০ (১৬০ বলে), সাকিবের ৯৭ (১২১ বলে) এবং শেষ দিকে মুশফিকের ১১ বলে ৩০ রানে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২৭৯ রানের বড় স্কোর গড়ে বাংলাদেশ।

১ রানে এক উইকেট। এই অবস্থায় কাণ্ডারি হলেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। শুরুর ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে দলকে টেনে নিতে থাকেন এ জুটি। ২৫.৪ ওভারে পূরণ হলো ১০০ রান।৮৭ বলে ক্যারিয়ারের ৪২তম ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। ৩৮তম হাফ সেঞ্চুরি করেন সাকিব আল হাসান। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন ৬৮ বলে।

হাফ সেঞ্চুরির করার পর হাত খুলে খেলতে থাকেন সাকিব-তামিম। উইকেটের চারদিকে চার আর ছক্কা। এক পর্যায়ে অতিক্রম করেন ১৬২ রান। মানে ১৬১ রানের অপরাজিত জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে যেটি দেশের জন্য নয়া রেকর্ড। দ্বিতীয় উইকেট জুটি ইমরুল কায়েস- জুনায়েদ সিদ্দিকি মিলে ১৬০ রান করেছিলেন ২০১০ সালে, ডাম্বুলাতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। এতদিন এটাই ছিল দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দেশের সর্বোচ্চ রান।

তামিম- সাকিব মিলে ওই রেকর্ড ভেঙে দেন। এতদিন যে কোনো উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বেশি রান করার কৃতিত্ব সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দখলে ছিল। গতবছর কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৪ রান করেছিলেন সাকিব- রিয়াদ পঞ্চম উইকেট জুটিতে।

১৬২ রান অতিক্রম করার পর দেখার ছিল রেকর্ড ২২৪ রান টপকাতে পারেন কিনা। সেদিকেই এগুচ্ছিলেন তারা। জোড়া সেঞ্চুরির দিকে যাচ্ছিলেন সাকিব- তামিম। কিন্তু না, ৯৭ রান করার পর ক্যাচ আউট হয়ে ৩ রানের আফসোস নিয়ে ফিরতে হয় সাকিবকে। ২০৭ রানের জুটি। গায়ানাতে যে কোনো উইকেট জুটিতে এটাই সর্বোচ্চ রান। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

সাকিব না পারলেও সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন তামিম। ১৪৬ রানে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। অবশ্য ক্যারিয়ারে এটাই ছিল তামিমের সবচেয়ে ধীর গতির সেঞ্চুরির রেকর্ড।

সাকিবের বিদায়ের পরপরই ৪ বলে ৩ রান করে স্ট্যাম্প হয়ে যান সাব্বির। তবে শেষ দিকে দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করেন মুশফিক। ৪৯তম ওভারে একাই ২২ রান নেন তিনি। ১১ বলে ৩০ রান করেন মুশফিক। আর ১৬০ বলে ১৩০ রান করে নট আউট থাকেন তামিম। বাংলাদেশের স্কোর থামে ৪ উইকেটে ২৭৯ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ইনিংস: ৫০ ওভারে ২৭৯/৪ (এনামুল হক বিজয় ০, তামিম ১৩০*, সাকিব ৯৭, মুশফিক ৩০*। হোল্ডার ১/৪৭)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস : ৫০ ওভারে ২৩১/ ৯ (এভিন লুইস ১৭, সাই হোপ ৬, ক্রিস গেইল ৪০, জেসন মোহাম্মদ ১০, হেটমেয়ার ৫২, জেসন হোল্ডার ১৭, আন্দ্রে রাসেল ১৩, নার্স ৭, জোসেফ ২৯*, বিশু ২৯* ; মাশরাফি ৩৭/৪, মিরাজ ৩৭/১, মুস্তাফিজ ৩৫/২, রুবেল ৫২/১)

ফল: বাংলাদেশ ৪৮ রানে জয়ী

ম্যাচসেরা: তামিম ইকবাল

(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/ডিএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে মুস্তাফিজের খেলা নিয়ে যা জানাল বিসিবি

যে কারণে বাংলাদেশের প্রাথমিক দলে নেই সাকিব-মুস্তাফিজ

আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলে যুক্ত হলেন বাংলাদেশি আম্পায়ার মোর্শেদ

বড় চমক রেখে জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা

টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে হারমানপ্রীত-স্মৃতি মানদানারা

তীব্র গরমে ফ্লাডলাইটে ফুটবল ম্যাচের সিদ্ধান্ত

জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সুনীল নারিন

 হাথুরুর সঙ্গে নির্বাচকদের বৈঠক সম্পন্ন, আলোচনা হলো যা নিয়ে

মুস্তাফিজের আইপিএল ছাড়া নিয়ে যা বললেন চেন্নাই কোচ

ঢাকায় পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :