সার্ভিস চার্জের ভূত তাড়াবে কে?

কাওসার রহমান
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৮, ০৮:২৯

আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল সত্যিকার অর্থেই কি ব্যাংকের সুদের হার কমবে? এ আশঙ্কার সত্যতা আরও নিশ্চিত করছে ব্যাংকগুলোর ভুতুড়ে সব সার্ভিস চার্জ। ডেবিট ক্রেডিট করে ব্যাংকগুলো তার ব্যালেন্স শিট ঠিকই রাখছে। তাহলে সুদের হার কমিয়ে সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার নামে ব্যাংকগুলোর এ প্রতারণার দরকার কি ছিল? বাজার অনুযায়ীই সুদহার নির্ধারিত হতো। এতে যাদের পোষাতো তারা ঋণ নিত, আর যাদের পোষাতো না তারা ঋণ নিত না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর জন্য এ লোক দেখানোর কোনো মানে নেই।

ব্যাংকগুলোর সার্ভিস চার্জের একটি নমুনা দেখা যাক। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ২০০৮ সালে ৮ বছর মেয়াদি গৃহঋণ নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ১৪ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে ওই ব্যাংক ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিপরীতে মাসিক কিস্তি ধার্য করে ১৬ হাজার ৫০৮ টাকা। ২০১৬ সালে কিস্তির মেয়াদ শেষ হলে ওই গ্রাহক জানতে পারেন তার অজান্তেই ১৪ শতাংশের পরিবর্তে সুদের হার ১৮ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে। আর এই সুদের হার তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ২০১০ সাল থেকে। ঋণের বিপরীতে ১৯ লাখ টাকার মতো পরিশোধ করলেও ব্যাংক ১৮ শতাংশ সুদ হিসাব করে আরও নিয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা।

ঋণ নিয়ে অতিরিক্ত সুদ গুনছেন দেশে এমন গ্রাহকের সংখ্যা অসংখ্য। আরও একজন গ্রাহক গত বছর একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা গাড়ি ঋণ নেন। শুধু প্রসেসিং ফি বাবদই ঋণের ১ শতাংশ কেটে রাখে ব্যাংকটি। এছাড়া ঋণের আবেদন ফি, ডকুমেন্টেশন ফি, লিগ্যাল ফি, মর্টগেজ ফি, হিসাব পরিচালন ব্যয়সহ ১২-১৫ ধরনের চার্জ কেটে রেখে ব্যাংক ওই গ্রাহককে দিয়েছে নগদ ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বাকি ৬০ হাজার টাকা সার্ভিস চার্জের নামে কেটে রাখা হয়। তিন বছরের জন্য নেওয়া ওই ঋণ গত মাসে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই গ্রাহক। ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে তাকে মোট ঋণের ২ শতাংশ হারে আরো ৪০ হাজার টাকা নিষ্পত্তি ফি বাবদ দিতে হয়েছে। সে হিসাবে ১২ শতাংশ সুদে নেওয়া গাড়ি ঋণে ২০ শতাংশের বেশি সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে এ গ্রাহককে।

এবার দেখা যাক, একজন গ্রাহক ১ কোটি টাকা ঋণ নিলে তাকে কত টাকা দিচ্ছে ব্যাংক। সব ধরনের সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট হিসেবে ২ লাখ টাকা বাদ দিয়ে ওই গ্রাহক পাবেন ৯৮ লাখ টাকা। কিন্তু সুদ গুনতে হবে ১ কোটি টাকার। কখনো কখনো এই সুদের হারও বেড়ে যায় গ্রাহকের অজান্তেই। উচ্চ স্তুরের সুদ এবং সার্ভিস চার্জের কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন গ্রাহকের সংখ্যাও কম নয়। দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়া এ ধরনের ছোট গ্রাহকদের ওপরই সার্ভিস চার্জের চাপ বেশি। তবে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিতে তাদের সার্ভিস চার্জ খুব বেশি দিতে হয়নি। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই নিজে থেকে সমঝোতা প্রস্তাব দিয়ে অনেক চার্জ কমিয়ে দেন।

ব্যাংকাররা বলছেন, বৈশ্বিক নিয়ম হচ্ছে সুদহার কমলে সার্ভিস চার্জ বাড়ে। ব্যাংক পরিচালনায় নানা ধরনের খরচ রয়েছে। আইটি, অনলাইন, কমপ্লায়েন্স, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, গ্রাহক সেবার মান বাড়ানো ইত্যাদিতে অনেক খরচ করতে হয়। এসব করতে হলে অবশ্যই চার্জ থাকতে হবে। মূল্যস্ফীতির সময়ে সবকিছুর মূল্যই বাড়ছে। ১ কোটি টাকা ঋণের ক্ষেত্রে সব ধরনের চার্জ মিলিয়ে ১ লাখ টাকাও হতে পারে, আবার ৫ লাখ টাকাও হতে পারে।

বিভিন্ন ব্যাংকের অক্টোবর মাসে ঘোষিত সুদহারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ব্যাংকগুলো বড় ও মাঝারি শিল্প খাতের মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬ থেকে সর্বোচ্চ ১৬.৫০ শতাংশ সুদ নিচ্ছে। ক্ষুদ্রশিল্পে সর্বনিম্ন ৮ থেকে সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ সুদ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ব্যবসা বা বাণিজ্যিক অর্থায়নে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১৫.৭৫ শতাংশ, গৃহঋণ অর্থায়নে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৮ থেকে সর্বোচ্চ ১৬.৫০ শতাংশ, মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১৫.৭৫ শতাংশ, ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৮.২৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫.৭৫ শতাংশ, ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১৫.৭৫ শতাংশ সুদ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এর বাইরে সবচেয়ে বেশি সুদ নেওয়া হয় ক্রেডিট কার্ড বাবদ ঋণের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১৪ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ সুদ নেয় ব্যাংকগুলো।

এসব সুদহার আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফি ও চার্জ। ঋণ পেতে হলে ব্যাংক প্রসেসিং ফি দেওয়া লাগে। ব্যাংকভেদে এই হার ১ থেকে ২ শতাংশ। ঋণ নিতে গেলে মর্টগেজ অবশ্যই জমা দিতে হয়। মর্টগেজ তৈরির ফি ২ শতাংশের কম নয়। ১ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত মর্টগেজ প্রস্তুত করতে ২ হাজার টাকা ফি লাগে। ২০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকার মর্টগেজ প্রস্তুতিতে ফি লাগে ৫ হাজার টাকা। এর চেয়ে বেশি অঙ্কের মর্টগেজ করতে ৫ হাজার এবং প্রতি লাখে ২ শতাংশ হারে ফি দিতে হয়। এর বাইরে রয়েছে সরকারি বিভিন্ন স্ট্যাম্পের নির্ধারিত মূল্য। ঋণ নিতে হলে গ্রাহককে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিআইবি ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। এজন্য নির্ধারিত ফি ২০০ টাকা। ঋণের জন্য ব্যাংকে সুনির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র জমা রাখতে হয়। এজন্য ব্যাংকে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা ফি দেওয়া লাগে। কোনো কোনো ব্যাংক এজেন্ট কমিশনও আদায় করে ২ থেকে ৩ শতাংশ। ব্যাংকের জামানতের নিরাপত্তার জন্য দিতে হয় ১ থেকে ২ শতাংশ কমিশন। ঋণের অঙ্ক যত বেশি হবে, কমিশনের অঙ্কও তত বেশি। ধাপে ধাপে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে দিতে হয় কমিটমেন্ট ফি। অবশিষ্ট অংশের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হয়। একজন গ্রাহককে যদি ৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে কোনো ব্যাংক এবং ওই গ্রাহক ২০ কোটি টাকা নিয়ে বাকিটা পরবর্তী সময়ে নিতে চান তাহলে ওই ৩০ কোটি টাকার ওপর ১ থেকে ২ শতাংশ হারে সুদ আদায় করে ব্যাংক। কোনো গ্রাহক যদি নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই তার ঋণ পরিশোধ করতে চান তাহলে তাকে বিতরণকৃত ঋণের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এর বাইরে সিন্ডিকেশন ঋণ নিতে হলে গ্রাহককে চুক্তি অনুযায়ী কিছু চার্জ দিতে হয়। এছাড়া নন-ফান্ডেড ঋণের ক্ষেত্রে রয়েছে সুনির্দিষ্ট কিছু চার্জ। এর বাইরে ঋণ নিতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ব্যাংক হিসাব খুলতে হয়। ওই ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় চার্জসহ ঋণের সুদহার ২০ থেকে ২৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে।

ব্যাংকগুলো তাদের কোন সেবায় কত চার্জ নেবে, আর কোন সেবায় চার্জারোপ করতে পারবে না এ বিষয়ে সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলার অনুযায়ী চার্জারোপ করে আসছে ব্যাংকগুলো। তবে সার্কুলার জারির পর ব্যাংকের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে নতুন সেবা ও পণ্য। বর্তমানে অনেক সেবা রয়েছে, যেগুলোর চার্জ ওই সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়নি। সার্কুলার অনুয়ায়ী ব্যাংকের প্রদত্ত কোন সেবার বিপরীতে কত চার্জ কাটা হবে, তা ব্যাংকের ভেতরে উন্মুক্ত স্থানে রাখার বিধান রয়েছে। তবে তা বেশিরভাগ ব্যাংকেই প্রতিপালিত হচ্ছে না। কেবল সংশিøষ্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেই দায় এড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো। আবার নিয়মিতভাবে প্রতি ছয় মাস অন্তর তথা প্রতি বছরের জুন ও ডিসেম্বরে ব্যাংকের চার্জের তালিকা হালনাগাদ করে ওই বছরের ৩০ জুলাই ও পরবর্তী বছরের ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। এ নিয়মও মানা হয় না।

ঋণের সুদ বাদ দিয়ে এবার সঞ্চয়ী হিসাবে কি পরিমাণ সার্ভিস চার্জ কেটে নেওয়া হচ্ছে সেটা দেখা যাক। প্রতি বছর একটি সঞ্চয়ী হিসাবের বিপরীতে একজন গ্রাহকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ব্যয় হচ্ছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। এর মধ্যে হিসাব পরিচালন ফি ৬০০ টাকা (প্রতি ষাণ্মাসিকে ৩০০) ও এটিএমের ডেবিট কার্ড ফি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। হিসাবের শুরুতে চেকবই নেওয়ার জন্য দিতে হয় আলাদা চার্জ। কেউ যদি হিসাবের জমার পরিমাণ জানতে চান অথবা কোথায় ব্যাংক সংক্রান্ত কাগজ জমা দিতে হয় তাহলে স্টেটমেন্ট প্রতি ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা চার্জ দিতে হয়। তবে বছরে দুবার এই স্টেটমেন্ট ফ্রি দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর, ২ বছর, ৫ বছর বা তার বেশি মেয়াদি আমানত রাখছেন গ্রাহক। এসব আমানতের বিপরীতে আগে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ সুদ দেওয়া হতো। বর্তমানে সুদহার ২ থেকে ৬ শতাংশ। এসব হিসাবের বিপরীতে রয়েছে বিভিন্ন সেবার বিনিময়ে চার্জ। বর্তমানে সব ব্যাংকই অনলাইন ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে। এই সেবা না দিলেও চার্জ কেটে রাখে অনেক ব্যাংক। অনলাইন লেনদেন করলে ৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা, ডেবিট কার্ড চার্জ ৪৬০ টাকা এবং বার্ষিক চার্জ ৫০০ টাকা। ওই চার্জের বিপরীতে আরও ১৫ শতাংশ হারে সরকারকে ভ্যাট দিতে হয়। সব মিলিয়ে বছরে করসহ চার্জের খরচ দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৩৫৭ টাকা। অর্থাৎ ক্ষুদ্র হিসাবে জমা যতই থাকুক না কেন এটি পরিচালনা করতে বছরে গুনতে হবে ওই টাকা। বিভিন্ন প্রয়োজনে সলভেন্সি সার্টিফিকেট নিতে হলে ব্যাংক আরও ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত চার্জ কেটে রাখে। এসব চার্জের বিপরীতেও রয়েছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এর বাইরে বিও হিসাব খুলতে বা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে ব্যাংক থেকে সার্টিফিকেট নিতে হয়। এগুলোয় কমপক্ষে ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা করে দিতে হয়। এসএমএস পাঠানো ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের জন্য বছরে আরও ৫০০ টাকার বেশি কাটা হচ্ছে। কোনো গ্রাহক এসএমএস বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা না নিলেও তার কাছ থেকে ঠিকই এই ফি নেওয়া হচ্ছে।

আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তফসিলি ব্যাংকের যেসব সেবার সর্বোচ্চ চার্জ আদায়ের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেই সর্বোচ্চ চার্জটিই আদায় করছে ব্যাংকগুলো। অনেক সময় এ সীমার বাইরে গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ কর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া বিও সনদ প্রদান ফি, সাইট এলসি কমিশন, রপ্তানি বিল নেগোসিয়েশন ও কালেকশন কমিশন, এলসি অ্যামেন্ডমেন্ট, কনফারমেশন ও ফরেন করেসপন্ডেন্ট চার্জের ক্ষেত্রে মেইলিং, কুরিয়ার, টেলেক্স, সুইফট সব ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত চার্জ আদায় করছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলো।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিতে তাদের সার্ভিস চার্জ খুব বেশি দিতে হয় না। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই নিজ থেকে সমঝোতা প্রস্তাব দিয়ে অনেক চার্জ কমিয়ে দেন। ছোট ঋণ নিতে গেলেই কেবল গ্রাহককে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তানসহ চীন, জাপান, আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন ব্যাংকের ওয়েবসাইট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওইসব দেশের ব্যাংকগুলোয় ঋণের প্রসেসিং ফি বাবদ দশমিক ১৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ পর্যন্ত কাটা হয়। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মতো এত বেশি সার্ভিস চার্জের খড়গ অন্য দেশের ব্যাংকগুলোয় নেই। ভোক্তা ঋণের মতো ছোট ছোট ঋণে হরেক রকমের সার্ভিস চার্জের অস্তিত্বও বিশ্বের কোনো ব্যাংকে পাওয়া যায়নি।

এমনিতেই আমাদের দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার ব্যবসায়িক প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের সুদহারের তুলনায় বেশি। এ অবস্থায় ব্যাংক ঋণের সুদহার একক অঙ্কে নামিয়ে এনে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস চার্জ যুক্ত করা হলে ব্যাংক ঋণের সুদহার আরো বেড়ে যাবে। তাহলে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার সুফল ব্যবসায়ীরা পাবে না। সত্যিকার অর্থে সিঙ্গেল ডিজিট সুদের সুবিধা দিতে হলে ব্যাংকগুলোর উচিত পরিচালনা ব্যয় কমিয়ে ব্যাংক ঋণ সার্ভিস চার্জ মুক্ত করা। তা না হলে বিপদে না পড়লে ভালো গ্রাহকরা ব্যাংকমুখী হবে না, ব্যাংকমুখী হবে লুটপাটকারীরা। তাদের নেওয়া ঋণ কেবল খেলাপিই হবে। বাড়বে খেলাপি ঋণের বোঝা। বিশৃঙ্খল আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে কেবল ক্ষীণই হবে।

কাওসার রহমান: নগর সম্পাদক, দৈনিক জনকণ্ঠ

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে জনতা ব্যাংকের ইফতার সামগ্রী বিতরণ

ঈদ উৎসব মাতাতে ‘ঢেউ’য়ের ওয়েস্টার্ন সংগ্রহ

৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

সিটি ব্যাংকের ২০২৩ সালের মুনাফা ৬৩৮ কোটি টাকা, বেড়েছে ৩৩%

ঈদ অফারে বিনামূল্যে মিনিস্টারের রেফ্রিজারেটর পেলেন আসাদুজ্জামান সুমন

সোনালী ব্যাংকে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনাসভা

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৭টি নতুন উপশাখার উদ্বোধন

স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শ্রদ্ধা

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে কর্মসংস্থান ব্যাংকের শ্রদ্ধা

স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে ইসলামী ব্যাংকের শ্রদ্ধা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :