নগরীর সমস্যা সমাধানের আশ্বাস কামরান-আরিফুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১১:০৭

মেয়র নির্বাচিত হলে সিলেট নগরীর যেসব সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।

মঙ্গলবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন ‘সময় টিভি’র ‘মেয়র প্রার্থীর মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে এই আশ্বাস দেন তারা। টিভি চ্যানেলটির বার্তা প্রধান তুষার আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হন এই দুই মেয়র প্রার্থী।

৩০ জুলাই সিলেট সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০০১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে এবার সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে একবার করে মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে ২৭.৩৬ বর্গ কিলোমিটারের সিলেট মহানগরী নানা সমস্যায় ভুগছে। মেয়র প্রার্থীর মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে এই দুই প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলে সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

সিলেট মহানগরীকে ঘিরে জলাবদ্ধতা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও যানজট এই তিন সমস্যাকে মূল সমস্যা আখ্যা দিয়ে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এগুলো দ্রুত সমাধান করার কথা বলেন।

এ সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হলে সমস্ত ফুটপাত জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং প্রকৃত হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

অন্যদিকে উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বেশ কিছু কাজ এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানান বিএনপি মনোনীয় মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক। বিশুদ্ধ পানির জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন, সুয়ারেজ সিস্টেমের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, ফুটপাত দখলমুক্ত করে হকারদের জন্য মার্কেট তৈরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

একই ধরণের উন্নয়ন পরিকল্পনার পাশাপাশি ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হওয়ার কথা জানান দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দলের মনোনীত এই দুই প্রার্থী।

অনুষ্ঠানে আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে নিজেদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কথা বলতে গিয়ে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘আমি মেয়র থাকাকালে একটি মাস্টার প্লান করেছিলাম। সেই অনুসারে কাজ করা হলে, মহানগরীর অনেক সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা যেত। আমি বিদায় নেয়ার আগে যে সমস্ত পরিকল্পনা পাস করিয়ে রেখেছিলাম, তার বিশাল অংকের টাকাও এসেছে। সরকার যেভাবে মেয়রকে সহযোগিতা করেছে, সে হিসেবে কাজ হয়নি।’

সিলেটের জলাবদ্ধতা নিরসনে কামরানের দেয়া মাস্টার প্লান বাস্তবায়ন করা হলে সিলেট নগরী মরুভূমিতে পরিণত হত বলে মন্তব্য করেন বিএনপি'র মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক।

পরিকল্পনায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উল্লেখ করে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার পর একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিলাম। যেখানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী, দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা উপিস্থিত ছিলেন। তারা বলেছেন, এই মাস্টার প্লান যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে সমগ্র সিলেট নগরী মরুভূমিতে পরিণত হবে। ইরাকে যুদ্ধের পর যে পরিণত হয়েছিল সে অবস্থায় পরিণত হবে।’

পরিকল্পনা নানা ঘাটছি ছিল উল্লেখ করে আরিফুল হক বলেন, ‘মাস্টার প্লানে সুয়ারেজ প্লান থাকা দরকার ছিল। এটা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা সেটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। পানির স্তর নিচে চলে যাচ্ছে, আর্সেনিকের সমস্যা আছে, এগুলো মাথায় নিয়ে মাস্টার প্লান দরকার।’

মাস্টার প্লানে ত্রুটি আছে তা মানতে নারাজ কামরান। নতুন প্লান করা মানে অর্থের অপচয় করা বলেও মনে করেন তিনি।

কামরান বলেন, ‘আমাদের সদ্য বিদায়ী মেয়র যখন ছিলেন, এই প্রকল্পের জন্য আমি পেয়েছিলাম ১১ কোটি টাকা। ওনারা পেয়েছেন ২৩৬ কোটি টাকা। তাহলে আমি বলবো সেই কাজগুলো পরিকল্পনা মাফিক হয় নাই।’

মেয়র নয় উন্নয়ন করেছে সরকার এবং স্থানীয় সাংসদ। এমন দাবি তুলে কামরান বলেন, ‘কাজ করতে গেলে সমন্বয় প্রয়োজন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা প্রয়োজন৷ অর্থমন্ত্রী আমাদের মেয়র সাহেবকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। যা উন্নয়ন হয়েছে তা বর্তমান সরকার করেছে, প্রধানমন্ত্রী করেছেন, অর্থমন্ত্রী করেছেন।’

উন্নয়ন কাজের জন্য সিটি করপোরেশন স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো সিটি করপোরেশনই তার নিজস্ব অর্থায়নে কোনো উন্নয়ন কাজ করতে পারেনি।’

সিলেট সিটি নির্বাচনে এবার কাউন্সিলর পদে ১৮৯ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১২৭ জন প্রার্থী। মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে ১৩৪টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ৩০ জুলাই। এতে ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/কারই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :