সরকারি কর্মকর্তারাও নৌকার প্রচারে: অভিযোগ রিজভীর
সরকারি কর্মকর্তারাও নৌকা মার্কার প্রার্থীর হয়ে ভোটের প্রচারণা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘সরকারি দলের লোকজন সড়ক-মহাসড়ক দখল করে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করছেন। বড় পিকআপ ভ্যানে বিশাল কালার মনিটর লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনে এসব অভিযোগ দেয়ার পরেও তারা সরকারের মুখ চেয়েই কাজ করছে। বর্তমানে ইলেকশন-গেট কেলেঙ্কারির মূল হোতা আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন।’
বুধবার নয়াপল্টনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন রিজভী।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না এমনটা জানিয়ে রিজভী বলেন, তিন সিটিতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও মন্ত্রী পদমর্যাদার নেতারা দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অথচ এসব বিষয় অভিযোগ করলে কমিশন সরকারের মুখ চেয়ে কাজ করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কাছে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা অরন্য রোদন, গল্পকথা মাত্র।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র মানে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সম্মতির ভিত্তিতে শাসন। আর এই গণসম্মতির প্রতিফলন ঘটে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। যে নির্বাচন স্বাধীন ক্ষমতাবলে নিরপেক্ষ দক্ষতার সাথে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বর্তমান কমিশন সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারছে না। নির্বাচনকে অন্যায়ভাবে সরকারের অনুকূলে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি বারবার উপেক্ষা করছে কমিশন।
রিজভী বলেন, ‘সরকারি ভোট সন্ত্রাসের বৈধতা দেয়ার সিলমোহর হয়ে নির্বাচন কমিশন একের পর এক যে পর্বতপ্রমাণ অন্যায়গুলোকে জায়েজ করছে, নিত্য নতুন মডেল তৈরি করার জন্য একদিন তাদের চড়া মাশুল দিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর আইনজীবী সমর্থকগণ করপোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও শোভাযাত্রা করছে। এই মিছিলে পাবলিক প্রসিকিউটর, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এবং স্পেশাল পিপিগণ অংশগ্রহণ করেছেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার পরও তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
‘অনুরূপভাবে রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক। উক্ত দুটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তারাও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে।
বিএনপি নেতার অভিযোগ গত সোমবার সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মিথ্যা মামলা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে সহজে ভোট কারচুপি করার জন্যই এই মামলা করা হয়েছে বলে দাবি তার।
নির্বাচনে আগেই ধানের শীষের পোলিং এজেন্টরা হয়রানির শিকার হচ্ছে এমন দাবি করে রিজভী। বলেন, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ধানের শীষ প্রতীক সমর্থকরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। আটককৃত মনোনীত পোলিং এজেন্টসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজশাহী ও রাজশাহী মহানগরীর বাহিরের বিভিন্ন থানার মামলায় চালান করে রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ সময় সোনারগাঁওয়ে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ছাত্রদল নেতা আলমগীর হোসেন বাদশা নিহতের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছেই। এরই অংশ হিসেবে সোনারগাঁওয়ে ছাত্রদল নেতা আলমগীর হোসেন বাদশা র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তিনি এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/বিইউ/এমআর)