মুক্তাগাছায় শিক্ষা সুবিধা পাচ্ছে পথশিশুরা

মনোনেশ দাস, ময়মনসিংহ
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১৭:১১

মুক্তাগাছা শহর এবং গ্রামাঞ্চলের দোকান-পাট, যানবাহন, হোটেল- রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমজীবী শিশুদের দেখা মিলে। এদের অধিকাংশই পথশিশু। ছোটবেলা থেকেই তাদের উপার্জন করতে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। একরত্তি শিশুর হাতেও তুলে দেয়া হয় ভারী কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই শিশুদের বিনিময়ে টাকা মেলে তার বাবা-মায়ের।

ওই শিশুদের মূলস্রোতে ফেরানোর বিষয়টি ভাবেন স্থানীয় সমাজসেবক ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. তারেক। এই পথ শিশুদের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য এবং বয়স্কদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ব্যক্তি উদ্যোগে মুক্তাগাছা শহরের পাড়াটঙ্গী এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘পথশিশু ও বয়স্ক নৈশ শিক্ষা একাডেমি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি পথশিশু ও বয়স্কদের প্রথাবহির্ভূত শিক্ষাও দেয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মো. তারেক জানান, পথশিশুদের মূলস্রোতে ফেরাতে শিক্ষার পাশাপাশি তাদের যথাযথ পুষ্টির ব্যবস্থা করছি এবং সেই সাথে নাচ, গান বা আঁকার মতো বিষয়ও তাদের শেখানো হয়। এই পথশিশুদের মূলস্রোতে ফেরাতে আমরা তাদের আলাদা করে দেখছি না। আমরা আর পাঁচজনের মতোই ব্যবহার করছি। মুক্তাগাছায় পথশিশু এবং শিক্ষাবঞ্চিত বয়স্কদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে তাদের স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমাদের একটাই লক্ষ্য। যেন কোনভাবে অন্ধকারে থাকা এই শিশুগুলোকে প্রথাগত স্কুলের দরজা অবধি পৌঁছে দেয়া যায়। যাতে সেখানে পড়াশোনা করার একটা সুযোগ তারা পায়। এই পথশিশুদের বিষয়ে সমাজ যদি ততটা সচেতন হয়ে ওঠে, সেটাই হবে আমাদের যথার্থ ইতিবাচক সচেতনতা।

প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবি নাট্যকার হারুন-অর-রশিদ জানান, এখানকার প্রায় শিশু-কিশোরই স্কুলে দু-এক ক্লাস পর্যন্ত পড়েছিল। পরে জীবিকার তাগিদে নামতে হয় পথে, বিভিন্ন কাজে। পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বন্ধ হয়ে যায় লেখাপড়া। ওরা পড়তে চায়, ফিরে পেতে চায় স্কুলের দীঘল আঙিনা, ফিরে পেতে চায় স্কুল পালানো দুরন্ত দুপুর, ছুটির ঘণ্টার সাথে এখনও ওদের চিৎকার করে আনন্দ প্রকাশ করতে ইচ্ছে করে। স্কুলের মধুময় জীবন ওদের ভীষণভাবে তাড়িয়ে বেড়ায়।

এই বয়সে আবারও ছাত্র হতে পেরে ওদের খুবই আনন্দ হচ্ছে। মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। এখানে স্কুল থেকে ঝরে পরা শিশু যারা জীবন-জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রম দিচ্ছে তারা সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত স্কুলে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণসহ শিক্ষা লাভের সুযোগও পাচ্ছে তারা। এছাড়া রাতে চলে বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম। এখানে রাতে রিকশা-ভ্যান চালক, হোটেল শ্রমিকসহ শহরের অনেক শিক্ষাপিপাসু বয়স্করা আসে লেখাপড়া করতে।

মুক্তাগাছার সচেতন মহল জানান, সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাচ্চা এবং বয়স্করা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের পরিশ্রমের ফলে শব্দের পৃথিবীকে চিনতে শিখছে। আমরা খুব খুশি। তাদের কথায়, এর ফলে সেই সব শিশু অন্তত বই আর সংবাদপত্র পড়তে পারবে। শিশুকে শিক্ষাদান বাধ্যতামূলক হলেও দারিদ্র এবং অন্যান্য কারণে ছোট থেকেই অনেককে ঢুকে যেতে হয় শ্রমিকের যাঁতাকলে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/ব্যুরো প্রধান/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :