ধামরাইয়ে ছেলের ছুরিকাঘাতে মা খুন
সাভারের ধামরাইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের ছুরিকাঘাতে মা খুন হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন তার বাবা ও ভাই।
সোমবার সকালে ধামরাই উপজেলার আড়ালিয়া ইউনিয়নের খরারচড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম জামেনা খাতুন। তিনি স্থানীয় কৃষক আব্দুল বাছেরের স্ত্রী। চার সন্তানের এই জননীর ছোট সন্তান রায়হান বেশ কয়েক বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তার শরীরে জ্বীনের উপস্থিতি রয়েছে বলে বিশ্বাস করতেন তার পরিবারের সদস্যরা।
ধামরাই থানার উপপরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, সন্তানের মানসিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে জামেনা খাতুন নিয়মিত সূরা-ক্বিরাত তেলায়াত করে সন্তানের মাথায় ফুঁ দিতেন। এই ঘটনায় বিরক্ত ও ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার সকালে ঘুমের মধ্যে মায়ের গলায় দা দিয়ে আঘাত রায়হান। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জামেনা।
এ সময় বাবা ও ভাই এগিয়ে গেলে তাদেরকেও এলোপাথাড়ি আঘাত করে রায়হান। এতে তারাও গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় আব্দুল বাছেরকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন আইসিইউতে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও রায়হানের মানসিক ভারসাম্য ঠিক ছিল। তখন তিনি একটি হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখানেই তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যায়। মাদরাসায় থাকাকালীন রায়হানকে জ্বীন আছর করেছে বলে বিশ্বাস করতেন তার পরিবারের সদস্যরা।
চিকিৎসার জন্য রায়হানকে বিভিন্ন কবিরাজের কাছে নিয়ে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে চিকিৎসা করানো হতো। কবিরাজের কথা অনুযায়ী সন্তানের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে রায়হানের মা জামেনা খাতুন নিজেও সূরা-ক্বিরাত তেলাওয়াত করে নিয়মিত ঝাড়-ফুঁক দিতেন।
সালাম মোল্লাহ নামের রায়হানের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘রায়হান সব সময় একা একটি ঘরে থাকতে বেশি পছন্দ করত। কারো সঙ্গে কথা বলতে চাইত না। আমার মনে হয় রায়হানের শরীরে থাকা অশরীরী জ্বীনকে তাড়ানোর চেষ্টা করায় ওই জ্বিন ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।’ ঘটনার পর মানসিক ভারসাম্যহীন রায়হানকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/কারই/এমআর