ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা জারি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০১৮, ১৯:২১

মানিকগঞ্জের হরিরাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রদলের এক নেতাকে উপজেলা সভাপতি করায় কয়েকদিন ধরেই চলছে টানটান উত্তেজনা। এরই জের ধরে সোমবার দুপুরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে।

এদিকে ওই উপজেলা চত্বরে আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় আগামী বৃহস্পতিবার পযন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

দুপুরে হরিরামপুর উপজেলা চত্বর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের দুই পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একপক্ষ হচ্ছে নবগঠিত কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, অপর পক্ষ পদবঞ্চিত ও বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা।

দুপুর ১২টার দিকে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ইসলাম রাজার নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপজেলা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি উপজেলা চত্বর পরিদর্শন শেষে হরিরাপুর-মানিকগঞ্জ সড়কের উঠার চেষ্টা করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে পুলিশ রাস্তা থেকে তাদের সরিয়ে দিলে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে তারা উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকেন।

বক্তরা অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের কর্মী দিয়ে হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়েছে। দ্রুত এই অবৈধ কমিটি বাতিল করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা চত্বরে প্রবেশ করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা, ইট পাটখেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এসময় এলাকার দোকান পাট কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় দুই পক্ষ। পরিবেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও থেমে থেমে উত্তেজনা আর ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়াম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান সায়েদুর রহমানের মধ্যস্থতায় পরিবেশ কিছুটা শান্ত হয়।

অপর দিকে দুপুরের পর পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিয়াস মেহেদী উপজেলা এলাকায় আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন।

হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। আমরা নেতাকর্মীরা নিয়ে আনন্দ মিছিল করতে গেলে অপর পক্ষের নেতার্মীরা হট্টগোলের সৃষ্টি করেছে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী রাজু আহমেদ বুলবুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা শুনছি- তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ভ্রান্ত কথা। যারা এই দলের ভাল চায় না, তারাই এই প্রপাকাণ্ডা ছড়াচ্ছে। আর আমরা এমপি মহোদয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতেই এই কমিটি দিয়েছি। আর আমরা চেষ্টা করছি ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে।

হরিরাপুর থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। উপজেলা পরিষদের গেইটের সামনে দুই পক্ষই মিছিল সমাবেশ করে। এক পর্যায়ে এক পক্ষ চড়াও হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং লাঠিসোটা নিয়ে অপর পক্ষের দিকে ধাওয়া করলে আমরা তা প্রতিহত করি। তবে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

হরিরাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস মেহেদি বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার ফলে সোমবার দুপুরের পর থেকে উপজেলা শহর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২৬ জুলাই হরিরামপুর উপজেলা ২৫ সদস্যের ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :