জেএমবির সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪১

নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির এক সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)। কেফায়েতুর রহমান ওরফে নোমান নামে ওই জঙ্গি সদস্য বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের বিচারাধীন মামলায় পলাতক আসামি।

র‌্যাব-১১ বুধবার বিকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, র‌্যাব-১১ এর আওতাধীন এলাকায় ইতিপূর্বে দায়েরকৃত মামলাসমূহের এজাহারনামীয় পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ক্রমাগত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ৩১ জুলাই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কেফায়েতুর রহমান ওরফে নোমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার কেফায়েতুর রহমান ওরফে নোমান নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার কোতায়ালের বাগ সস্তাপুর এলাকার মাওলানা মাহবুবুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে হোসাইন আহমেদ আজমী ছদ্মনামে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রাজশাহীর কাটাখালী থানার বাখরাবাজ এলাকার জামিয়া উসমানীয়া হোসাইনাবাদ মাদ্রাসায়।

সে ১৯৯৩ সালে ফতুল্লার কুতুবআইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ৫ম শ্রেণি, ২০০২-২০০৩ সালে জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম, নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ হতে দাওরায়ে হাদিস পাস করে এবং তার পাশাপাশি শাহ ফতুল্লা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা হতে দাখিল পাস করে। ২০০৭ সাল হতে অদ্যাবধি জামিয়া উসমানিয়া হোসাইনাবাদ মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

এই জেএমবির সক্রিয় সদস্যের কার্যক্রম হিসেবে র‌্যাব জানায়, কেফায়েতুর রহমান ওরফে নোমান, ২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলা মামলার অন্যতম আসামি। সে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বোমা-বিস্ফোরণের ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে স্বীকার করেছে। ওই ঘটনায় সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আহ্বান শিরোনামে ২২টি ছাপানো লিফলেট বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জেএমবির আত্মপ্রকাশ করে।

জিজ্ঞসাবাদে সে আরো জানায়, তৎকালীন জেএমবির প্রধান শায়েখ মাওলানা আব্দুর রহমানের নির্দেশে তার অন্যান্য সহযোগীদের সাথে নিয়ে বোমা হামলায় অংশগ্রহণ করে। জেএমবির প্রধান শায়েখ মাওলানা আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানিসহ গ্রেপ্তার ও পলাতক জেএমবির অন্যান্যদের সাথে কেফায়েতুর রহমানের সরাসরি যোগাযোগ ছিল বলে জানা যায়।

কেফায়েতুর রহমানের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দীপে হলেও মাত্র সাত বছর বয়সে তার বাবার সাথে নারায়ণগঞ্জে আসে এবং ফতুল্লা থানার বর্ণিত ঠিকানায় বসবাস শুরু করে। তার বাবা নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। সারাদেশে এই সিরিজ বোমা হামলার পর ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা শুরু হলে কেফায়েতুর রহমান এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে ছদ্মবেশে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়।

২০০৭ সালে নাম পরিবর্তন করে হোসাইন আহমেদ আজমী পরিচয়ে রাজশাহীর কাটাখালী থানা এলাকায় তার খালাত ভাইয়ের মাদ্রাসা জামিয়া উসমানিয়া হোসাইনাবাদ, বাখরাবাজে শিক্ষকতা শুরু করেন। কেফায়েতুর রহমান আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়া নিজেকে আড়াল করার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করে ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে বগুড়া এলাকায় বিবাহ করে স্ত্রীসহ ওই মাদ্রাসার পাশে একটি বাসায় বসবাস করতে থাকে। গোপন সংবাদে নির্ণয় করে তাকে ফতুল্লা থানা এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাবের দাবি, ২০১৭-২০১৮ সালে র‌্যাব-১১ কর্তৃক বেশ কয়েকটি সফল জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সকল অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ৯২ জন বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযানে গ্রেপ্তার এ সকল জঙ্গিকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নেটওয়ার্ক এবং কার্যক্রমের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। প্রাপ্ত সে সকল তথ্যাদি যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণের পর জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত যে সকল সদস্য এখনও গ্রেপ্তার হয়নি তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য অব্যাহতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :