হজযাত্রীদের যত প্রস্তুতি

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট ২০১৮, ২১:৪৩
ফাইল ছবি

ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ। অন্য যেকোনো ইবাদতের চেয়ে হজের বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা আলাদা। এই ইবাদতে আর্থিক ও শারীরিক উভয়ের অংশগ্রহণ রয়েছে। বিপুল অর্থ এবং পর্যাপ্ত শ্রম দিতে হয় হজ ও উমরাহর জন্য। সুতরাং এতো কষ্ট ও ত্যাগের এই ইবাদতটি যথাযথ নিয়ম ও পদ্ধতিতে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তা না হলে ত্যাগের এই ইবাদত পুরোটাই নষ্ট হয়ে যাবে।

হজযাত্রায় মানসিক প্রস্তুতিটা বড় বিষয়। মনে মনে প্রস্তুতি নিন, আল্লাহর ঘর ও প্রিয় নবীর (সা.) রওজা জিয়ারত করতে যাচ্ছি যত কষ্টই হোক তা অম্লান বদনে সইবো। এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ-অনুযোগ করবো না। মানসিকভাবে দৃঢ়তা থাকলে হজ যাত্রার কষ্ট বহুলাংশে কমে যায়। হজ যেন কবুল হয়, সবকিছু যেন সহজে সম্পন্ন করা যায় এ ব্যাপারে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করুন।

যে ট্রাভেলসের মাধ্যমে হজে যাচ্ছেন তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিন। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও টিকার পর মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করুন। দেশের প্রায় প্রতিটি জিনিসপত্রই সৌদি আরবে কিনতে পাওয়া যায়। তবে ইবাদতে বিঘ্ন ঘটা, জানাশোনা না থাকা এবং দামের তারতম্যের কারণে কিছু জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়। আগে যারা হজ করেছেন তাদের কাছ থেকে জেনে এসব জিনিস কিনে নিন।

নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানের কাউন্টারে মালপত্র বুকিং দিন। টোকেনটি যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন। সময়মত বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন। প্রথমবার বিমান আরোহী হলে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন জেনে নিন। বিশেষ করে টয়লেট ব্যবহারে সতর্ক থাকবেন। ছয় ঘণ্টা জার্নি শেষে জেদ্দা হজ টার্মিনালে অবতরণ করবেন। এ সময় অবতরণ কার্ড, হেলথ কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি কাগজপত্র বের করুন। ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা দেখে (ছবি ও আঙুলের ছাপ নিয়ে) পাসপোর্টের নির্দিষ্ট পাতায় সিল দেবেন। বিমানের বেল্টে মালামাল খুঁজে নিরাপত্তা-তল্লাশির জন্য মালামাল দিন। এরপর লাল-সবুজ পতাকা অনুসরণ করে ‘বাংলাদেশ প্লাজায়’ পৌঁছাবেন। সেখানে গিয়ে অপেক্ষা করুন।

অপেক্ষা দীর্ঘ হতে পারে, ধৈর্য হারাবেন না। সেখানে ওজু করা, নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। বসার জন্য চেয়ারও রয়েছে। প্রতি ৪৫ জনের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা। মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় নিয়ে যাবে। জেদ্দায় নামার পরই মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কবজি বেল্ট দেওয়া হবে আপনাকে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র গলায় ঝোলাবেন। মক্কাগামী বাসে ওঠার পরই আপনার পাসপোর্ট নিয়ে যাবে, এতে ঘাবড়াবেন না। দেশে আসার সময় যথাসময়ে আপনি পাসপোর্ট ফেরত পাবেন।

মোয়াল্লেমের গাড়ি মক্কায় আপনাকে হোটেলের পাশে নামিয়ে দেবে। হোটেলের রুম বুঝে পাওয়ার পর মালপত্র রেখে একটু বিশ্রাম করে নিন। নামাজের সময় হলে নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহ পালন করুন। কাবা শরিফে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন; এটাই সবচেয়ে ভালো। কাবা ঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে: হাজরে আসওয়াদ, রকনে ইরাকি, রকনে শামি ও রকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়। ওমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন।

হজ মূলত একটি প্র্যাকটিক্যাল ইবাদত। সরাসরি নির্ধারিত স্থানে না গিয়ে হজের মাসয়ালা বোঝানো মুশকিল। তবে হজের মাসয়ালাকে খুব জটিল মনে করাও ঠিক নয়। আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করতে হবে, তিনি যেন হজের প্রতিটি কাজ সহজ করে দেন। হজের নিয়মকানুন শেখার জন্য প্রচুর বইপত্র আছে; শিক্ষিতরা নিজেরাই শিখে নিতে পারেন। এছাড়া প্রত্যেক কাফেলার সঙ্গে মুয়াল্লিম থাকেন; যেকোনো প্রয়োজনে তারা আপনাকে সহযোগিতা করবেন।

(ঢাকাটাইমস/০৫আগস্ট/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ইসলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :