নিহত তৃষার পরিবারের পাশে পুলিশ সুপার

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৫

বখাটেদের হাত থেকে সম্ভ্রম রক্ষায় পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মারা যাওয়া গাইবান্ধার মেধাবী স্কুলছাত্রী তৃষা হত্যার ১৬ বছর পর তার ছোট বোন তৃণাকে সাইকেল উপহার দিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া।

বুধবার দুপুরে স্কুল কলেজে মেয়েদের উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পুলিশের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তৃণাকে সাইকেল উপহার দেয়া হয়।

এসময় পুলিশ সুপার বলেন, গাইবান্ধায় তৃষার মতো আর কাউকে অকালে ঝরে যেতে দেয়া হবে না।

তিনি তৃষার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আমরা সবসময় তৃষার পরিবারের পাশে আছি।

তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধার পুলিশ খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, জুয়া, মাদক ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধ করে গাইবান্ধায় সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই জেলায় এ ধরনের মর্মান্তিক কোনো ঘটনা ঘটার ন্যূনতম সুযোগও নেই।

গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এসময় তৃষার বাবা আব্দুস সাত্তার, মা আলেমা বেগম, চাচি ও নারী নেত্রী আমাতুর নুর ছাড়া তৃষার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্যাহ আল ফারুক, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, যুগ্ম সম্পাদক আবেদুর রহমান স্বপন।

প্রসঙ্গত, গাইবান্ধা জেলা শহরের ভিএইড রোডের বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার ও আলেমা বেগমের মেয়ে তৃষা মধ্যপাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ২০০২ সালের ১৭ জুলাই স্কুল ছুটি হওয়ার পর বিকাল সাড়ে ৪টায় বাড়ি ফেরার পথে মডার্ন, আশা ও শাহীন নামে পার্শ্ববর্তী এলাকার তিন যুবক তার পথরোধ করে উত্যক্ত করে এবং টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় আত্মরক্ষার্থে স্কুলের বই খাতা নিয়েই ছুটতে শুরু করে তৃষা। দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে পুকুর পাড়ে চলাচলের পথ শেষ হয়ে যায়। এ সময় তিন দিক থেকে তাকে ঘিরে ফেলে বখাটেরা। সম্ভ্রম রক্ষায় পুকুরে ঝাপ দেয় তৃষা। পুকুরের গভীর পানিতে হাবুডুবু খেতে থাকে। আর দুর্বৃত্তরা পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে মেয়েটির ডুবে যাওয়া দেখে হাসতে থাকে এবং তারা পুকুরে ডুবে যাওয়া নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা দুর্বৃত্তদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তিন বখাটেদের বিরুদ্ধে মামলা হলে বিচারক তিনজনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন। হাইকোর্টও তাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। আপিল বিভাগ আসামিদের ১৪ বছরের সাজার রায় দেন। ২০০২ সাল থেকে জেলে থাকায় আদালতের রায়ে দেয়া সাজার মেয়াদ এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে।

(ঢাকাটাইমস/৮আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :