‘১২ লাখ উইঘুর মুসলিমকে আটকে রেখেছে চীন’

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৮, ১৩:৩২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

অন্তত দশ লাখ উইঘুর মুসলিমকে গোপন কারাগারে আটকে রেখেছে চীন। এছাড়া আরো দুই লাখের বেশি উইঘুর মুসলিমকে রাজনৈতিক প্রশিক্ষণের নামে বিশেষ শিবিরে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বর্ণবাদ নির্মূল কমিটির সদস্য গে ম্যাকডোগাল শুক্রবার এ তথ্য জানান। শুক্রবার চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে একটি মসজিদ ভাঙা রুখে দাঁড়ানোর খবরের মধ্যেই নিপীড়িত উইঘুর জনগোষ্ঠী নিয়ে জাতিসংঘের বক্তব্য এল।

জাতিসংঘ বলছে, যেসব শিবিরে এসব উইঘুর মুসলিমকে আটক রাখা হয়েছে সেগুলোর ব্যাপার কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছে চীন। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫০ জন চীনা কর্মকর্তার কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। খবর বিবিসি ও আল জাজিরা।

জাতিগত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানরা সাধারণত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশেই বসবাস করেন। সেখানকার জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ ভাগই উইঘুর মুসলিম। তিব্বতের মতো জিনজিয়াং প্রদেশও চীনের ভেতর অবস্থিত একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। গত কেয়েক দশক ধরেই জিনজিয়াংয়ে উইঘুর সম্প্রদায় ও অন্যান্য সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনকে চীনা কর্তৃপক্ষ আটক করছে বলে খবর আসছিল। তাছাড়া সেখানে উইঘুরদের ধর্মপালনের স্বাধীনতা নেই।

এছাড়া সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জিনজিয়াংকে পুলিশি এলাকায় পরিণত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছিলো।

এদিকে ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস জানিয়েছে, বন্দিদের কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা হয় এবং তাদের কমিউনিস্ট পার্টির স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়।

তারা জানাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব বন্দিদের ঠিকমতো খাবার খেতে দেয়া হয় না এবং তাদের ওপর নির্যাতনও চালানো হয়। অধিকাংশ বন্দির ক্ষেত্রেই যেহেতু কোনো অভিযোগ গঠন করা হয় না তাই তারা কোনো আইনি সহায়তাও পান না। অভিযোগ রয়েছে, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে এ ধরনের বন্দি শিবির চালাচ্ছে চীন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ জাতিসঙ্ঘের কমিটির কাছে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে দেখা গেছে, কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু মুসলিমদের ব্যাপকভাবে বন্দি বানাচ্ছে। তারা বলছে, এইসব শিবিরে বন্দি ব্যক্তিদের জোর করে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি বিশ্বস্ত হতে শপথ করানো হয়।

মুসলিমদের বংশানুক্রমিক ধারা ভেঙে দিতে জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিম নারীদের জোরপূর্বক বিয়ে করছে চীনা পুরুষরা। যুদ্ধে ধর্ষণের মতো মূলত জাতিগত নিধন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এমনটা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/একে/ডিএম