গুজবের পেছনে কারা, তথ্যচিত্র বানাচ্ছে আ.লীগ

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৫৪ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০১৮, ২০:৩৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় জিগাতলায় সংঘর্ষ

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়ানোর বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করছে ক্ষমতাসীন দল। এতে কারা কীভাবে এই গুজব ছড়িয়েছে, সেটি উল্লেখ থাকবে।

শনিবার  ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের নতুন ভবনে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির নিয়মিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলেন, ‘ভবিষ্যতে আর কেউ যাতে গুজব সন্ত্রাস এবং অপ-প্রচার চালিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে না পারে এবং কীভাবে এ গুজব ছড়ানো হয়েছিল সেগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য আগামী ১৮ আগস্ট একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটি কর্তৃক প্রকাশ করা হবে।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট তুলকালাম হয় ধানমন্ডি এলাকায়। আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে চারজনকে হত্যা ও চারজনকে ধর্ষণের গুজব ফেসবুকে প্রচার করা হয় বেশ পরিকল্পিতভাবে। আর এতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে তারা দলবেঁধে ছুটে আসে ধানমন্ডি ৩/এর কার্যালয়ের দিকে।

সঙ্গে ছুটে আসে লাঠিধারী আরও বেশ কিছু মানুষ। যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক পরা ছিল, তারা ব্যাগে করে পাথর নিয়ে এসেছিল। আর সেই পাথর তারা ছুড়ে মারতে থাকে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে, দুই পক্ষে হয় সংঘর্ষ।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সমস্ত দাবি মেনে নিয়ে তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম শিশু-কিশোরদের ঘাড়ে বন্ধুক রেখে বিএনপি-জামায়াত এবং ১/১১ এর কুশীলবরা দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার লক্ষ্যে নোংরা রাজনৈতিক খেলায় নেমেছিল।’

‘তারা স্কুলের ড্রেস পরিয়ে ছাত্রদল, শিবিরের ক্যাডারদের এবং ছাত্রী সংস্থার মেয়েদের মাঠে নামিয়েছিল। বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা, মাহমুদুর রহমান মান্নার কথোপকথন ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এবং তা এখন দেশের সবার জানা হয়ে গেছে কীভাবে এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল।’

‘অর্থাৎ এই আন্দোলনকে নিয়ে একটি গুজব ছড়ানো হয়েছিল,  আওয়ামী লীগ অফিস আক্রান্ত হয়েছিল।’

‘শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ অফিসকে ঘিরে যে গুজবগুলো ছড়ানো হয়েছিল এবং যেদিন গুজব ছড়ানো হয় সেই দিনই আওয়ামী লীগ অফিসে শিক্ষার্থীরা ঘুরে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে এগুলো গুজব তাদেরকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।’

‘এই আন্দোলনে আমাদের এক কর্মীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। সেটিও তারা ছাত্রের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে বলে অপপ্রচার চালিয়েছে। অর্থাৎ এ গুজব সন্ত্রাস চালানো হয়েছে দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে। এই গুজব সন্ত্রাস ও অপপ্রচার তারা বিদেশেও ছড়িয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত সাড়ে নয় বছর ধরে তারা (বিএনপি) বিভিন্ন সময় আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে হাজার হাজার মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করে দেশে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপর তারা অন্যের ঘাড়ে চেপে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।’

‘কখনও তেল গ্যাস কমিটির আশ্রয় নিয়েছে, কখনও কোটা আন্দোলনে আশ্রয় নিয়েছে, সর্বশেষ শিশু কিশোরদের ঘাড়ে চড়ার চেষ্টা করেছে।’

‘সুতরাং সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন পাগলা কুকুরের মতো আচরণ করছে। আপনারা জানেন পাগলা কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। এখন জনগণও এই আতঙ্কে আছে, বিএনপি কামড় দিয়ে আতঙ্ক ছড়াতে পারে।’

আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/টিএ/ডব্লিউবি/জেবি)