ভিডিও দেখে সাংবাদিক পিটুনির বিচার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৫৯ | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০১৮, ০০:৩১

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শেষ দিকে এসে সাংবাদিকদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার ভিডিওচিত্র দেখে সবার বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার কুমিল্লার বুড়িচং সদরে দুই কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নতুন স্টেশন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই আন্দোলন প্রলম্বিত হওয়ার পর বিভিন্ন গোষ্ঠীর সুযোগ নেয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে।

এর মধ্যে ৪ আগস্ট ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে চারজন ছাত্রকে হত্যা এবং চারজনকে ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে হামলা করা হয় সেখানে। মুহূর্তেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। দিনভর সংঘর্ষের পর ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্র কার্যালয় ঘুরে এসে জানায়, তাদেরকে উত্তেজিত করা হয়েছিল গুজব ছড়িয়ে, কিন্তু এর কোনো সত্যতা নেই।

এর পরদিন আর স্কুল কলেজের ছাত্ররা নামেনি। তবে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মিছিল নিয়ে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে বিকালের দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় কিছু তরুণ ফটো সাংবাদিকদেরকে বেদম পিটুনি দেয়।

এই ঘটনায় সাংবাদিকরা নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। শনিবারের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানাচ্ছেন গণমাধ্যম কর্মীরা।

এরই মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু আশা করছেন, শনিবারের মধ্যেই হামলাকারীরা গ্রেপ্তার হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুমিল্লায় বলেন, ‘যারা সাংবাদিকদের নির্যাতন করেছে তাদেরকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী। বলেন, ‘বাংলাদেশে এই মুহূর্তে কিডনি এবং ক্যান্সার নয়, সড়ক দুর্ঘটনা জনসাধারণের জন্য আতঙ্ক এবং প্রধান ঘাতক।

‘বাংলাদেশে প্রতিবছর ছোট-বড় প্রায় ছয় হাজারেরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় প্রতি বছর তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এসব দুর্ঘটনা ও প্রানহানির পরিমাণ কমিয়ে আনতে সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সড়ক প্রসস্তকরণসহ বিভিন্ন পরিবর্তন আসছে। তারপরও যেগুলো দরকার সেগুলো সমাধানে এখনো সম্ভব না হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাড়ি আছে, তার বেশিরভাগ ফিটনেসবিহীন। এসব ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোর চালকদের থাকে না ড্রাইভিং লাইনেন্স। এছাড়া পথচারী যাত্রী ও গাড়ির চালকরা কেউ ট্রাফিক আইন মেনে চলে না।’

পরে সাত কোটি তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা বুড়িচং থানার নব নির্মিত চারতলা ভবন উদ্বোধন শেষে সুধি সমাবেশে যোগ দেন মন্ত্রী। বিকালে তিনি কুমিল্লা পুলিশ লাইনে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে নির্মিত চেতনায় ৭১ ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন এবং পুলিশ লাইনে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

ফারার সার্ভিস স্টেশনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ও বুড়িচং সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান পিএসসি, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেনসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি