ব্লেডে সিজার: নবজাতকের মৃত্যু, মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৮, ২২:১৪

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দুই পল্লী চিকিৎসকের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন এক গর্ভবতী মা। ব্লেড দিয়ে সিজার করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে নবজাতকের। আর সেই মায়ের অবস্থাও এখন সংকটাপন্ন। তোলপাড় করা এই ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন ওই দুই পল্লী চিকিৎসক।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাতে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামে সুজিত বর্ষণের বাড়িতে।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বুধবার (৮ জুলাই) রাতে বড়খলা গ্রামের সুজিত বর্মনের স্ত্রী শৌমরী বর্মনের প্রচণ্ড প্রসব ব্যথা উঠে। এই সময় সুজিতের পরিবারের লোকজন গ্রামের পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মন ও নুরুল আমিন নামের দুজনকে বিষয়টি জানান। তারা ঘটনা শুনে দুইজন মিলে সুজিতের বাড়িতে যান। গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজনকে জানায়, পেটের বাচ্চা মারা গেছে আর মায়ের অবস্থা বেশি ভালো না। দ্রুত সিজার করাতে হবে। আর তারা নিজেরাই সিজার করতে পারবেন বলেও জানান।

পেটের বাচ্চা মারা গেছে শুনে সুজিতের পরিবারের লোকজন কী করবে দিশেহারা হয়ে পড়ে। কোনো উপায় না দেখে দুই ডাক্তারের কথায় রাজি হয়ে যায়। পরে তারা গর্ভবতীর যোনিপথ ব্লেড দিয়ে অতিরিক্ত কেটে বাচ্চা বের করে আনেন। এতে নবজাতক শিশুর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে যায়।

শিশুটি পেটে মৃত বললেও জীবিত অবস্থায় জন্ম নেয়। নবজাতকের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পথেই শিশুটি মারা যায়।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন মা শৌমরী বর্মনও। তাকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মৃত নবজাতকের বাবা সুজিত বর্মন বলেন, ‘আমার সুস্থ বাচ্চাটিকে মেরে ফেললেন দুই পল্লী চিকিৎসক। আমার স্ত্রীও এখন মৃত্যুর মুখোমুখি। কী করব ভেবে পাচ্ছি না। তারা পারবে না বললেই তো পারতেন। কেন এমন করলেন। আমি এর বিচার চাই।’

এই ঘটনা শুনে পরদিন ঘটনাস্থল বড়খলা গ্রামে যান তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ঘটনা শুনেছি, এটি খুবই দুঃখজনক। এখনও কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। থানা থেকে একজন এসআই পাঠিয়েছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)