জনকের জন্য শোকগাথা...

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০১৮, ২০:২০

ড. কাজী এরতেজা হাসান

কবি শামসুর রাহমান একটি কবিতা লিখেছেন, ‘নিহত জনক, অ্যাগামেনন, কবরে শায়িত আজ।’ ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যখন বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। কবি রূপক আশ্রয়ে যে কবিতাটি লিখেছিলেন  তা আজ আমাদের কাব্য সাহিত্যে অমূল্য সম্পদ। কবিতাটিতে উঠে এসেছে একজন বঙ্গবন্ধু, একজন দুঃখীকন্যার বেদনাতুর মর্মগাথা। ওই দিনটি ছিল রোববার। ওই দিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে ঢাকার তৎকালীন কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে তাকে একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর পর্যন্ত এলাকাজুড়ে লাখো জনতার ঢল নামে। সারাদেশের গ্রাম-গঞ্জ-শহর-নগর-বন্দর থেকে অধিকারবঞ্চিত মুক্তিপাগল জনতা সেদিন ছুটে এসেছিল রাজধানী ঢাকায়। এ সময় সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী লাখো কণ্ঠের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা বিমানবন্দর এলাকা। সেই শেখ হাসিনা আজ বাংলার মানুষের অনিবার্য আশ্রয়।

যে মানুষটি হাজার হাজার বছর ধরে পলিবাহিত বঙ্গোপসাগর পাড়ের ব-দ্বীপ বঙ্গভূমি নামক এ ভূখ-কে দিয়েছে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি সবুজাভ ভূখণ্ড। একটি লাল-সবুজ পতাকা। যার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। সংগ্রাম, আত্মত্যাগ রাঙিয়ে দিয়েছে রক্তাক্ত প্রান্তর। শুধু একজন মানুষ তার ৪৪ ইঞ্চি বুকের পাটায় ধারণ করেছে মানুষের তৃষ্ণার্ত প্রেম-ভালোবাসা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে নির্মম ঘাতকের বুলেট স্তব্ধ করে দেয় যে মহান প্রাণ, তার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জনগোষ্ঠীর আশা-আকাঙ্ক্ষার স্বপ্নজারিত প্রতীক। দীপ্ত স্বদেশের মানচিত্র। আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ পরাধীনতা থেকে বেরিয়ে আসা দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষকে দ্বিখণ্ডিত করে যে দুটো দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে ১৪ আগস্ট ও ১৫ আগস্ট, তার নাম ভারত-পাকিস্তান। পাকিস্তানের জন্ম দুটো প্রদেশ নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান। পাকিস্তানের অদ্ভুত ভৌগোলিক সীমানা! ১৪শ মাইলের ব্যবধানের মাঝখানে ভারত। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ভাষা বাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা উর্দু। খাদ্যাভ্যাস থেকে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণই আলাদা। তারপরও পাকিস্তানের অভ্যুদয়ের পর পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ প্রথম ভাষা প্রশ্নেই বিভক্ত হয়ে পড়ে। পাকিস্তানের জাতির পিতা কর্তৃক চাপিয়ে দেওয়া উর্দু ভাষা প্রত্যাখ্যান করে বাঙালি জনগোষ্ঠী। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে বুকের তপ্ত রক্ত ঢেলে দিয়ে মাতৃভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করেন তারা। তারপর থেকে শুরু হয় পাকিস্তানের শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির সংগ্রাম। এ সময় জন্ম নেয় সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র নিয়ে রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ।

১৯৪৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে কখনো গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি। পাকিস্তানের শাসককুল মুসলিম লীগের বাতাবরণে মূলত সামরিকতন্ত্রের জন্ম দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগোষ্ঠী পরাজয় মানেনি, মানেনি কোনো পরাভব। সামরিকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে দাবি আদায়ের সংগ্রাম। মূলত ১৯৪৮ সালের উপনির্বাচনে শাসক মুসলিম লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের মধ্য দিয়েই সূচিত হয় সংগ্রামের মাইলফলক। ১৯৫৬ সালের মওলানা ভাসানীর ‘ওয়ালেকুম’, ১৯৬২-এর শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্রদের দুর্বার আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ১৯৬৯-এর আগরতলা মামলাসহ ১৯৭০-এর নির্বাচন পর্যন্ত বাঙালি জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠাকল্পে যে চিরন্তন দাবি পুঞ্জীভূত ছিল, তাকে গণযুদ্ধে রূপান্তর করার মহান এবং কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রমে সফল নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু ও তার দল আওয়ামী লীগ। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭০-এর পাকিস্তানি রাজনীতিতে শেখ মুজিবই একমাত্র মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিলেন। শেখ মুজিবই সেই মানুষ, যিনি সহস্র বর্ষব্যাপী বাঙালি জনগোষ্ঠীর সার্থক ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হন। উপমহাদেশে এমন মানবিক রাজনৈতিক চরিত্র বিরলপ্রজ। এ সময় পাকিস্তানি শাসককুল শেখ মুজিবের দুর্বার গণআন্দোলনের মাঝে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।

১৯৭০-এর সেই নির্বাচনে শেখ মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয়লাভ করে। তারপর ঘটতে থাকে পাকিস্তানি শাসককুলের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের নির্মম খেলা। নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর শেখ মুজিবকে অর্থাৎ বাঙালির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হলো না পাকিস্তানি শাসকরা। এ সময় ১৯৭১-এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণ দেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’ যা একটি জাতিকে যুদ্ধের ময়দানে নিয়ে যায়। বাঁশের লাঠি নিয়ে কামানের সামনেও বুক পেতে দিতে দ্বিধা করেনি বাঙালি জাতি। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ, ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের। পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় একটি জনগোষ্ঠীর। যার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি বাঙালি জাতির জনক।

স্বাধীনতা প্রাপ্তির তিন বছরের মাথায় এই মহান মানুষটিকে হত্যা করে কিছু বিভ্রান্ত সৈনিক, স্বার্থান্বেষী কিছু রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, তৎকালীন সামরিক উপ-প্রধান জিয়াউর রহমান গং। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতে পারেননি কোনো বাঙালি তার ক্ষতি করতে পারে। বিশ্বের কীর্তিমান নেতারা তাকে সাবধানি সংকেত দিলেও তিনি তা মানতে চাইতেন না। আগেই বলা হয়েছে, হাজার বছরের এই ভূখ-ের ইতিহাসে শেখ মুজিবই মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা পেয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী চক্র এবং এদেশীয় গুপ্তঘাতকরা বাঙালি জাতির সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিসহ শিশু রাসেলকে পর্যন্ত নিস্তার দেয়নি। সিঁড়িতে গড়াতে গড়াতে রক্তাক্ত বঙ্গবন্ধু বুকে বুলেট নিয়েই নিজ হাতে জন্ম দেওয়া ভূখণ্ডেই শেষ আশ্রয় নিলেন। টুঙ্গিপাড়ার খোকা টুঙ্গিপাড়াতেই শুয়ে আছেন।

মেজর জিয়া গংরা তার বিচার রহিত করার জন্য ‘ইনডেমনিটি’ বিল পাস করে রাখে। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ফিরে এলে ‘ইনডেমনিটি’ বিল জাতীয় সংসদে বাতিল করে জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন। তারপর ৩৪ বছর ৪ মাস ১২ দিন অপেক্ষা শেষে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় ঘোষণা করেন। এই ঐতিহাসিক রায়ের মধ্য দিয়ে বাঙালিরা জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের কলঙ্কতিলক মোচনে সক্ষম হয়। এরপর জাতি ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ আইনের আওতায় জেল হত্যা ও যুদ্ধাপরাধী বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেছে।

আমরা সেই জাতি, যে জাতির জন্য তোমার জীবন উৎসর্গ করে গেলে। যে মানুষের জন্য তোমার অপরিসীম মমতা বিলিয়ে দিয়েছিলে, তারা তোমাকে ভুলে যায়নি। বরং মনে রাখবে চিরদিন। কবি বলেছেন, ‘কেবল তোমার জীবন তুচ্ছ পিতা?’ না? কতিপয় ঘাতক, পাকিস্তানি দোসর ছাড়া তোমাকে সবাই ভালোবাসে। ভালোবাসে বাংলার আকাশ-বাতাস, মজুর-মেহনতি মানুষ, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা পাড়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তারা অকৃতজ্ঞ নয়। তাদের জন্য তোমার আমৃত্যু ঋণ। যা কখনো ভুলে যাওয়ার উপায় নেই।

আমি প্রথমেই বলেছি, তোমার মৃত্যু আমাকে শোকার্ত করে রেখেছে। দীর্ঘ সময় তোমার বিদেহী আত্মা আমাদের আত্মার মর্মমূলে অব্যক্ত ক্রন্দন নিয়ে গুমরে উঠেছে। একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা বারবার তোমাকে কলঙ্কিত করতে চেয়েছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে তোমার দেশপ্রেমকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। ঘাতকদের গাড়িতে উড়েছে তোমার প্রাণের পতাকা। কিন্তু ওরা ভুলে যায় সত্য চিরকাল সুন্দরের পক্ষে। মানুষের আবেগসঞ্জাত ভালোবাসার মৃত্যু হতে পারে না। আর ইতিহাস চিরকাল সঠিক কথাই বলে। সেই ধারাবাহিকতায় ঘাতকদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া তোমার দুঃখী কন্যা শেখ হাসিনা নিহত জনকের রক্তাক্ত পথ ধরে বাংলার মানুষের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। পিতার মতো তেজদীপ্ত সাহস নিয়ে বাংলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে মানুষের উত্তাল ভালোবাসার কাছে নিজেকে অনিবার্য করে তোলেন। তিনবার বাংলার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা নিয়ে তার প্রাণান্ত চেষ্টার বিরাম নেই। তোমার বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের মুখে তিনি তুলে দিয়েছেন থালাভরা ভাত। যে ভাতের স্বপ্ন তুমি দেখেছিলে। তিনি বর্তমান বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন মধ্যমআয়ের দেশের কাতারে। যা তুমি স্বপ্ন দেখেছিলে। তোমার সুযোগ্য কন্যা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তা বাস্তবায়ন করে তুলছেন। তুমি খুশি হও পিতা। আমরাও তোমার মতো স্বপ্নভুক মানুষ। স্বপ্ন নিয়েই আগামীর পথে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের আত্মাকে কষ্ট দিয়ে নয়, ভালোবেসে।

তোমাকে হত্যা করে ঘাতকরা যে কুটিল জাল বুনেছিল, আমরা তা ছিন্ন করে তোমার কাক্সিক্ষত মর্যাদায় এগিয়ে যাচ্ছি। তুমি কি আমাদের ক্ষমা করবে না? কবি বলেছেন, ‘তোমার সৃষ্টির চেয়ে তুমি যে মহান।’ তারপরও যখন প্রশ্ন করি, তখন নিজেদের পরাজিত মনে হয়। গ্রিক ট্র্যাজেডির মতোই তোমার জীবন। মৃত্যুর পর তোমাকে নিয়ে কত গল্প, কবিতা, উপাখ্যান রচিত হচ্ছে। যতদিন বাঙালি জাতি থাকবে ততদিন তোমার কীর্তি চির অম্লান হয়ে থাকবে। তারপরও আমি বিশ্বাস করি, দীর্ঘ ৪৩ বছর পর তোমাকে নিয়ে যারা অহেতুক কুৎসা রটনায় মগ্ন, তারা এমনিতেই ইতিহাসের ঘৃণিত আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। মহাকালের চিরসত্য নিয়মের বাইরে আমরা কেউ নই। ইতিহাসেই তুমি থাকবে চির উজ্জ্বল। পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় অনেক জল গড়িয়ে যাবে। জলের ক্রন্দনে একটি শব্দ বারবার ধ্বনিত হবে ‘মুজিবুর-মুজিবুর’। তাই কবি বলেছেন, ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততকাল রবে কীর্তি তোমার, শেখ মুজিবুর রহমান।’

দেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্যের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। ব্রাকেটবন্দি বহুধাবিভক্ত আওয়ামী লীগকে শুধু ঐক্যবদ্ধই নয়, শক্তহাতে হাল ধরে আওয়ামী লীগকে বিপুল জনসমর্থিত দেশের সর্ববৃহৎ একক বৃহত্তম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। আর বাংলার মানুষ তাকে আপনজন হিসেবে বঙ্গবন্ধুর শূন্য জায়গায় বসিয়ে রাখতে চেয়েছে। তুমি খুশি হওনি পিতা?

বঙ্গবন্ধু মগজের চেয়ে হৃদয় দ্বারা চালিত হতেন বেশি। আর এ ধরনের মানুষেরা হৃদয়বান হয়ে জন্মগ্রহণ করেন। হাজার বছর ধরে বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন হৃদয়বান, দেশপ্রেমিকের জন্ম উপাখ্যানের মতো। ৪৭-৭২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে, শেখ মুজিবের রাজনীতিকালে বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে স্বপ্ন জাগ্রত হয়েছিল তার চূড়ান্ত উন্মোচন ‘৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। বাঙালির স্বপ্নপুরুষ শেখ মুজিব। তার হত্যার মধ্যে স্বপ্নভুক মানুষেরা স্বপ্নহীন হয়েছে। তার কাছে জনগণের প্রত্যাশা বেশি বলে কষ্টের তাপ অসহনীয়। তবুও সম্ভবত শেখ মুজিব জনগণকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। আমি যে ভূখণ্ডের আলো হাওয়ায় বেড়ে উঠেছি তার স্থপতি হত্যার অপরাধী হিসেবে আমাকে দায়ী করার জবাব দিতে পারি না। তুমি কি আমায় ক্ষমা করবে?

লেখক: আওয়ামী লীগের শিল্প-বাণিজ্য ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির সদস্য