শেখ হাসিনার চোখে বঙ্গবন্ধুর পদ্মাসেতু

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৫:৪০ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৪১

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ ও বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
ছবি: ফোকাস বাংলা

স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। প্রমত্তা পদ্মায় সেতু হবে। দক্ষিণের সঙ্গে বন্ধন গড়বে রাজধানী। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো আরও আগেই উত্তাল পদ্মায় বুকে মেরুদণ্ডের মতো ফুটে উঠতো সেতু। মেরুদণ্ডই বটে। দক্ষিণে শিল্প দাঁড়াবে এই ভিতেই ভর করে।

শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশকে গড়ে তুলছিলেন আপন পরিবারের মতো। পরম যত্নে। ভালোবাসায়। পদ্মা, যমুনায় সেতু হবে দক্ষিণ-উত্তরের মানুষ আর পিছিয়ে থাকবে না। সেই পথে যখন হাঁটছিলেন তখন এলো পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট। থমকে গেলো বাংলাদেশ। তারপর দীর্ঘ সময় আড়ালেই ছিল পদ্মার বুকে সেতু গড়ার স্বপ্ন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দক্ষিণের মানুষের পরানের গহিনে লুকিয়ে থাকা পদ্মাসেতুর স্বপ্ন আবারও দেখা দিলো। এবার আর স্বপ্ন দেখা নয়, স্বপ্নপূরণের পালা। সেই স্বপ্নপূরণের পথে বাঁধা এসেছিল। ষড়যন্ত্র হয়েছে। ঋণ সহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক দাতারা।

সবাই তখন হতাশ। তাহলে কি অধরাই রয়ে যাবে পদ্মাসেতু? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচলিত হলেন না। ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি চোখের স্বপ্ন তিনি ধুলোতে লুটাতে দিলেন না। দ্ব্যর্থহীন বললেন, বিদেশি ঋণ না পাই, তাতে কী? পদ্মাসেতু হবে। আমরাই আমাদের টাকায় পদ্মাসেতু করবো।

বঙ্গবন্ধুকন্যার এই দৃঢ়চেতা ঘোষণায় কেউ কেউ আস্থা রাখতে পারেননি তখন। আদৌ কি সম্ভব? এতবড় একটা কাজ। নিজেদের টাকায় করা?

শেখ হাসিনার দৃঢ়তার প্রমাণ পেতে বেশি সময় লাগেনি। পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান। প্রমত্তার বুকে রেখার মতো ফুটে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্ন। যে স্বপ্নে খেলা করেছিল বঙ্গবন্ধুর চোখে, আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দিয়েছে তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চোখে। সেই চোখ কি আর আপ্লুত না হয়ে পারে? আবেগ কি ছুঁয়ে যাবে না পরানের গহিন ভিতরে?  

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিতে ভালোবাসা জানিয়ে ফিরছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই তনয়া শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। হেলিকপ্টার তখন পদ্মা নদীর উপরে ছায়া ফেলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা উড়ন্ত যানের স্বচ্ছ কাঁচ গলিয়ে চোখ রাখলেন প্রমত্তার বুকে। বোন শেখ রেহানাকে ডেকে বললেন, ‘ওই যে দেখো আমাদের পদ্মাসেতু।’ দুই বোনের মন হয়তো তখন অজান্তেই বলে উঠেছে, ‘আহা! বাবা যদি আজ বেঁচে থাকতেন!’

কী সেই মুহূর্ত! যান্ত্রিক ফ্রেমে বন্দী হলো সেই মহাক্ষণ। প্রধানমন্ত্রী তাকিয়ে আছেন পদ্মার বুকে রেখাচিত্রের মতো ফুটে থাকা সেতুর দিকে। না, হয়তো শেখ হাসিনা নন, স্বয়ং বঙ্গবন্ধু তাকিয়ে ছিলেন তখন। মহাসিন্ধুর ওপার থেকে দেখছিলেন, তাঁর বাংলাদেশ সোনারবাংলা হওয়ার পথে কতটুকু এগিয়েছে। দেখছিলেন, প্রমত্তা পদ্মায় গর্বিত এক বাংলাদেশকে!

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/এইচএফ)