কোটা আন্দোলনের নেত্রী লুমা রিমান্ডে

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৮, ২০:০৮

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফুর নাহার লুমার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম কাজী কামরুল ইসলাম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।

রাজধানীর রমনা মডেল থানার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ওই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম লুমাকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত ২৯ জুলাই ঢাকার এয়ারপোর্ট রোডে দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় স্কুল-কলেজের কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে। ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটানোর জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাভাবে প্রচারিত বিভিন্ন উসকানিমূলক লেখা/পোস্ট/ফটো/ভিডিও‘র মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, এজাহারে উল্লিখিত ১৭নং ক্রমিকে বর্ণিত ফেসবুক আইডি নেম লুমা সরকার। ওই আইডির পরিচালনাকারী লুৎফুন্নাহার লুমা ওরফে নীলা ওরফে লুমা সরকার। আসামির টাইম লাইনে পোস্ট করা লেখা অশ্রাব্য স্ট্যাটাস দেখে যে কেউ নীতিভ্রষ্ট হতে পারে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। গোপন তদন্তে লুমা অনেক সক্রিয়ভাবে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত আছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। লুমার কাছ থেকে দুইটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তার সহযোগীদের শনাক্ত, অপপ্রচার বন্ধ ও মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আসামিপক্ষে নূর উদ্দিন, জায়েদুর রহমানসহ প্রমুখ আইনজীবী রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে তারা বলেন, লুমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। আমরা জানি ওই দিন দুই শিক্ষার্থী মারা গেছে। আর আসামিকে কেন রিমান্ডে নেয়া হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ আবেদন দিয়ে বলে, তদন্তের স্বার্থে, অমুকের স্বার্থে রিমান্ড চাই। এটা আইনসঙ্গত না। তারা বলেন, মেয়েটির বাবা আব্দুল কুদ্দুস একজন অধ্যাপক ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। তার কোনো ভাই নেই। তারা তিন বোন। আদালতে তার মা এসেছেন। গরিব মানুষ তারা। আর অধিকাংশ সচেতন মানুষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে। তার নামে একটা কথিত ভিডিও চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। অযৌক্তিক রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। মেয়েটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি আন্দোলনের সময় ভয়ে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা না দিয়ে বাড়িতে চলে যান বলে দাবি করেন আইনজীবীরা।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে লুমার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এদিকে রিমান্ড শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন লুমার মা মিসেস রাশেদা বেগম ও কেয়া সরকার।

এর আগে গত বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খিদ্রচাপড়ি এলাকায় দাদার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও বেলকুচি থানার পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/আরজেড/জেবি)