ভারতীয় গরু বাজারে দেখতে চান না খামারিরা

রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
 | প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট ২০১৮, ২৩:০০

ভারতীয় গরু আমদানি না হলে লাভের মুখ দেখবে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের গরুর খামারিরা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও গড়ে ওঠেছে কয়েক হাজার মৌসুমী পশুর খামার।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হিসাবে মতে, এই খামারের সংখ্যা তিন হাজারের কিছু বেশি। ওইসব খামারে দেশি, নেপালি, সিন্ধি, শংকর জাতীয় গরুসহ মহিষ ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। আর ওইসব খামারের পশুকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে দেশীয় খাবার খড়, খৈল, ভূষি, গুঁড়ের চিটা, লবণ, চাল-ডালের ছোলা-গুড়াসহ চাষ করা লিপিয়ার ঘাস খাওয়ানো হচ্ছে। ব্যবহার হচ্ছে না মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড জাতীয় কোনো ইনজেকশন। ফলে উৎপাদিত হচ্ছে সম্পূর্ণ নিরাপদ মাংস বলে দাবি খামারিদের।

যদি ভারতীয় পশুর আমদানি না হয়, তাহলে লাভবান হবে বলে আশা করছেন এখানকার খামারিরা। তাদের দাবি, ভারতীয় পশু আমদানি বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকার যেন বিশেষ নজরদারি রাখেন।

ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের খামারি সোহেল মিয়া জানান, প্রতিবছরই আমরা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গরু মোটাতাজাকরণ করে বাজারে বিক্রি করি। এই বছর আমার খামারে ১২টি গরু মোটাতাজাকরণ করছি। আশা করছি, এই বছর ভারতীয় গরু আমদানি কম হবে। তাহলে আমরা গরু বিক্রি করে লাভবান হতে পারব।

আগানগর গ্রামের খামারি হেলাল উদ্দিন জানান, প্রতিবারই কোরবানি ঈদের মৌসুমে আমি নাটোর ও যশোর থেকে গরু ক্রয় করে ৩-৪ মাস দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালন পালন করে বাজারে বিক্রি করে থাকি। এ বছর আমি ১০টি গরু মোটাতাজা করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আল্লাহর রহমতে গরু বিক্রি করে লাভবান হতে পারব।

উপজেলার নবীপুর গ্রামের আরেক খামারি মো. আতর মিয়া জানান, গত বছর ভারতীয় গরু আমদানি হওয়ায় গরু লালন-পালন করে লাভবান হতে পারিনি। কোন রকম পূঁজি পেয়েছিলাম। এই বছর ১ লাখ ৬০ হাজার করে ৭টি গরু কিনেছি। তিন মাস লালন-পালন করে ঈদ বাজারে বিক্রি করব। আশা করছি, প্রতিটি গরু ২ লাখ টাকা করে বিক্রি করতে পারব। যদি এর কম দামে বিক্রি করি, তাহলে লোকসান হবে। কারণ আমার ৭টি গরু মোটাতাজাকরণে ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

আগানগর গ্রামের এবি ফার্মের মালিক পাবেল আহমেদ জানান, অল্প সময়ে গরু মোটাতাজাকরণ একটি লাভজনক ব্যবসা। প্রতিবছরই আমি গরু ও মহিষ মোটাতাজাকরণ করে থাকি। অল্প সময়ে এ ব্যবসাটি করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়াও পশু মোটাতাজাকরণে খামারিদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, ওষুধ ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে থাকে।

ভৈরব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় এ বছর ৩ হাজার খামারে প্রায় ৯ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। মানবদেহে ক্ষতিকর কোন প্রকার বিদেশি ইনজেকশন ব্যবহার না করেই গরু লালন-পালন করছেন খামারিরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অফিস থেকে খামারিদের প্রাকৃতিক খাদ্যসামগ্রী, কৃমিনাশক ও ভিটামিন ভ্যাকসিন বিতরণসহ হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সিজিপির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে খামারগুলো।

তিনি খামারিদের দাবির সাথে একমত পোষণ করে জানান, যদি ভারতীয় পশু প্রবেশ ঠেকানো যায়- তাহলে খামারিরা লাভবান হবেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :