বিলম্ব, ভিড়, গরমে কাহিল ট্রেনযাত্রা

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৫:০৮ | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৪৫

এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস

একে তীব্র গরম, উপচে পড়া ভিড়, তার ওপর ট্রেন কখন ছাড়বে তার নেই ঠিক- এই তিনে মিলে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ। বড়রা সয়ে গেলেও স্টেশনে সহ্যসীমার বাইরে শিশুদের। বাড়ি যাওয়ার আনন্দের চেয়ে দুর্ভোগের অবসান কখন হবে সেটাই অপেক্ষা।

রবি ও সোমবার কর্মদিবস থাকলেও যারা ছুটি নিতে পেরেছেন তাদের ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকেই। তবে ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিন শনিবার সকাল থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে সকাল থেকে শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে বেশিরভাগ ট্রেনই স্টেশনে আসতে এবং ছেড়ে যেতে সময় নিচ্ছে ঘণ্টা খানেক।

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রেন দেরিতে স্টেশনে পৌঁছানো, যাত্রীদের অস্বাভাবিক চাপ বাড়ায় এবং স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার সময় লাগার কারণে শিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এই বিলম্বগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। চারটা কন্ট্রোল এবং সেন্ট্রাল কন্ট্রোল সব সময় কাজ করছে। স্টেশনে আমাদের কর্মকর্তারাও পুরোপুরি সজাগ আছেন।’

কমলাপুর থেকেই প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রী বগি ভরে যাত্রী উঠেছে ছাদে। বিমানবন্দর স্টেশনেও উঠবে যাত্রী। আর তীব্র রোদ আর গরমে ঠাসাঠাসি অবস্থায় ট্রেনের ভেতরটাও হয়ে উঠেছে উত্তপ্ত।

প্লাটফর্মে ফ্যান চলছে বটে, কিন্তু সে বাতাসে কেউ শীতল হচ্ছে, এমনটা নয়। ঘামে নেয়ে যাচ্ছে মানুষ। ছোটরা কান্নাকাটি করছে। এর মধ্যে সঠিক সময়ে ট্রেন ছেড়ে না যাওয়ায় অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সকাল থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিড় করতে থাকেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। ঈদের ছুটি শুরু না হলেও রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। গত ৯ আগস্ট যারা ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট কিনেছিলেন, তারাই আজ রাজধানী ছাড়ছেন।

দিনের প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন রাজশাহী অভিমুখী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ছয়টায় কমলাপুর ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি একঘন্টা দেরিতে ছেড়ে যায়। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল নয়টায় স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটিও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে।

দিনাজপুর চিলাহাটি অভিমুখী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটিও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যায়। খুলনা অভিমুখী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ছয়টা ২০মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে যায় সকাল আটটায়।

অন্যদিকে দিনের প্রথম ঈদ স্পেশাল ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস সোয়া নয়টায় স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এই ট্রেনটির সময় পরিবর্তন করে ১০টা ৫৫ মিনিটে করা হয়েছে।

গাইবান্ধাগামী যাত্রী আনিসুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সড়কে যানজটের ভোগান্তি এড়াতে ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম। এখন ট্রেনে উঠেই দেখছি ভিড় আর ভিড়। নিঃশ্বাস নেওয়ারও কায়দা নেই।’

লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রী হিমেল ঢাকটাইমসকে বলেন, ‘সড়কের যে হাল, ঈদের ট্রেনেই মানুষের ভোগান্তিহীন যাত্রার একমাত্র পথ। কিন্তু দেরিতে ট্রেন ছাড়া কারো কাম্য নয়। ঈদ যাত্রার দ্বিতীয় দিনেই যদি ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হয় তবে আগামী দিনগুলোতে কী হবে?’

ট্রেনের বিলম্বের বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দুই একটি ট্রেন দেরিতে আসায় ছেড়ে যেতে একটু দেরি হচ্ছে। এটা সিডিউল বিপর্যয় নয়।’

‘ধূমকেতু, সুন্দরবন, নীলসাগর, রংপুর এক্সপ্রেস দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে আসায় এই ট্রেনগুলি যাত্রায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আমরা সব সময় চেষ্টা করছি যাতে কোনও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় না হয়।’

শনিবার মোট ৬৮টি ট্রেন ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে। এর মধ্যে ৩১টি আন্তঃনগর, চারটি ঈদ স্পেশাল, বাকি ট্রেনগুলো লোকাল ও মেইল সার্ভিস।

ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/জিএম/ডিএম