বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের অবস্থান নিয়ে সতর্ক আইনমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৮, ২১:২৩ | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ২১:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে যাদের অবস্থান চিহ্নিত হয়নি, তাদের ব্যাপারে এখন কিছু বললে তারা সতর্ক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তাই তাদের ব্যাপারে এখন কিছু বলতে চান না তিনি।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক সেমিনারে সাংবাদিকদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর।

আইনমন্ত্রী বক্তব্য দেয়ার সময় তাকে দুটি লিখিত প্রশ্ন পাঠান সাংবাদিকরা। একটি হলো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়, অন্যটি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ সম্পর্কে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই রায় ঘোষণা করা হবে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীরা ন্যক্কারজনক কাজ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তার পরও স্বাভাবিক বিচারপ্রক্রিয়ায় মামলা চলছে। তাদের (আসামি) সময় দেয়া হচ্ছে, কিন্ত আসামিরা কালক্ষেপণ করছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার‌্যালয়ের সামনে সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভী রহমানসহ ২২ নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার শ্রবণশক্তি।

বঙ্গবন্ধু খুনিদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত বন্ধুসুলভ সম্পর্ক। সেখানে বঙ্গবন্ধুর একজন চিহ্নিত খুনি অবস্থান করছে। তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আর একজন নূর চৌধুরী কানাডা আছেন বলে জানান আইনমন্ত্রী। তাকে ফেরত আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে কানাডা মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করেছে। মৃত্যুদণ্ড পেতে পারে এমন কোনো আসামিকে তারা কোনো দেশে ফিরিয়ে দেয় না। এ সমস্যাটা সমাধান হলে তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব। এ ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে খুন হন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর ছয় দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন। এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। এ ছাড়া শরিফুল হক ডালিম, কর্নেল রশীদ, মুসলেহ উদ্দীন রিসালদার ও ক্যাপ্টেন মাজেদ বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন। তাদের অবস্থান এখনো চিহ্নিত করা যায়নি।

বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর অন্য খুনিদের সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যদের ব্যাপারে এখন বলব না। যদি বলি তাহলে তারা সতর্ক হয়ে যাবে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট কালরাতে শোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার ২১ বছরেও শুরু হয়নি। বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার শুরু করেন। যে সোনার বাংলা বঙ্গবন্ধু করতে চেয়েছিলেন তার কন্যা শেখ হাসিনা সেটা বাস্তবায়ন করছেন। কোনো অপশক্তি বাংলাদেশের উন্নতি রোধ করতে পারবে না।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার‌্য ড. মশিউর রহমান। বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক আব্দুল মান্নান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।

(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/জেআর/মোআ)