প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস করে এবার মিলল কোরবানির গরু

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৮, ২১:২৬ | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০১৮, ১৮:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আবার এসএমএসে সাড়া দিয়ে উপহার পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার জামালপুরের হিজড়া সম্প্রদায়কে তিনি কোরবানির জন্য গরু পাঠালেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির সোমবার সকালে এই গরু হস্তান্তর করেন l

প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন জানান, সকাল সাড়ে আটটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মোবাইলে একটি এসএমএস পান।

ময়ূরী নামে একজন এসএমএসে জানান, তিনি হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্য। কোরবানি দেয়ার সামর্থ নেই। তিনি কোরবানি দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি গরু চান।

এরপর প্রধানমন্ত্রী তাঁর একান্ত সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে নির্দেশ দেন ময়ূরীর ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করে একটি কোরবানির গরু পাঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।

পরে একান্ত সচিব ওই নাম্বারে ফোন করে জানতে পারেন ময়ূরী জামাল সদরে হিজড়াপল্লীতে থাকেন। সেখানে ৮৭ জন হিজড়া বসবাস করেন।

একান্ত সচিব তাৎক্ষণিক জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবিরকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পৌঁছে দেন। আর তিনি দুপুরে হিজড়া সম্প্রদায়ের কাছে একটি এক লাখ টাকার গরু এবং আনুসাঙ্গিক খরচের টাকা হস্তান্তর করেন।

এস এম এসে সাড়া দিয়ে গত দুই মাসে প্রধানমন্ত্রীর আরও দুটি উপহার বেশ আলোড়ন তুলেছিল। এর মধ্যে তিনি ফেনীতে একটি স্কুল ভবন করেছেন, আর ময়মনসিংহে অটোরিকশা চুরি যাওয়ার পর একজন দরিদ্র্য মানুষের জন্য নতুন অটোরিকশা পাঠান।

গত ২২ জুন সৌদি প্রবাসী আনোয়ার হোসেন খোকন প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল ফোন নম্বরে এসএমএস পাঠান। তিনি বাংলাদেশে তার নিজের এলাকা ফেনী সদর উপজেলার রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরাবস্থার কথা জানান।

খোকন স্কুলটির কোড নম্বর পাঠিয়ে জানান, স্কুলটি মুক্তিযোদ্ধা আফজালুর রহমানের জায়গাতে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করতে পারছে না।

এসএমএসটি পাওয়ার পর ওই দিন ভোর সাড়ে ছয়টায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর একান্ত সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। আর স্কুলটির কোড নম্বর মিলিয়ে একান্ত সচিব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এর সাথে যোগাযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পৌঁছে দেন।

এরপর ৩০ জুন বিকালে পাঁচ শ্রেণিকক্ষের একটি ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়।

এর আগে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার আবদুস সামাদ অটোরিকশা হারিয়ে বিপদে পড়ার পর গত ১৮ জুন সহায়তার আকুতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএম পাঠান।

সামাদ লিখেন, ‘মা, তুমি সারা দেশের মা। আমাকে একটু সাহায্য করুন।’

আর দুই দিন পর পুলিশ এসে সামাদকে নিয়ে যায়। আর ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরু ইসলাম তার হাতে তুলে দেন নতুন একটি নতুন অটোরিকশা।

 

প্রধানমন্ত্রী বরাবর বলেন, তার গণভবনের দুয়ার দেশের সব মানুষের জন্যই খোলা। দেশবাসীকে নির্ভয়ে সেখানে যেতেও নানা সময় পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে নানা সময় নানা দাবি পূরণ হয়েছে। ২০১৬ সালের আগস্টে পটুয়াখালীর শিশু শীর্ষেন্দু বিশ্বাস পায়রা নদীতে সেতু করার আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখে শেখ হাসিনার কাছে। আর এরপর তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন।

গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বাসিন্দা দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশু সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবেসে চিঠি লিখেছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই চিঠি পড়ে মুগ্ধ হয়ে জবাবও দিয়েছিলেন।

ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/ডব্লিউবি