ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে ঘরমুখো মানুষ, উদাসীন পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৮, ১১:১৮ | প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০১৮, ১১:১৫

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ির পানে ছুটছে মানুষ। জনতার ঢলে বাস-ট্রেন-লঞ্চে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এসব যানে জায়গা না পেয়ে অনেকে বিকল্প যান হিসাবে ট্রাকে করে বাড়ি রওনা হচ্ছেন। এতে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও আটকানো যাচ্ছে না ঘরমুখো মানুষদের।

গত বছরের ঈদুল আজহার সময়ও ট্রাকে করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে ট্রাক উল্টে মারা যায় ১৭ জন। বাস সংকটের কারণে মানুষের ট্রাকে করে বাড়ি ফেরার চিত্র দেখা গেছে এবারও।

নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের জিরানী বাজার এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর এলাকায় বাস স্টপগুলোতে বিপুল সংখ্যক ঘরমুখো মানুষকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। পর্যাপ্ত গাড়ি না পেয়ে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, লেগুনা ও বাসের ছাদে করে নিজেদের গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।

গত বছর ঈদুল ফিতরের আগে এভাবে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে ট্রাক উল্টে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছিল। নিহতদের সবাই ছিলেন তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক। গাজীপুর থেকে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় ফিরছিলেন।

আরব, ইউরোপ, জাপান ও আশপাশের এলাকায় ঈদ উদযাপন হচ্ছে আজ। তাই কাল ঈদ হবে ধরে নিয়ে লাখো মানুষ ছুটছে বাড়ির দিকে। পথে যানজট ও বৃষ্টির বাগড়া থাকলেও বাড়ি যাওয়া ঠেকাতে পারছে না তাদের। এজন্য বেশি দামে হলেও ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন অনেকে। রংপুরে যাওয়ার জন্য অনেককে গুণতে হচ্ছে এক হাজার টাকা পর্যন্ত।

এছাড়া গতকাল সারাদিন ও রাতে বাসের সিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়ায় সাভারের বিভিন্ন পয়েন্টে গণপরিবহন ও দূরপাল্লার পরিবহন না পেয়ে অসংখ্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ধরে যারা বাড়ি যাচ্ছেন, তারা পর্যাপ্ত বাসের অভাবে ভুগছেন। আর এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে তারা চাপছেন মালামাল পরিবহনের গাড়ি ট্রাকে।

আশুলিয়ার হিয়ন অ্যাপারেলস নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক আসমা বেগম। বাড়ি জামালপুর। প্রায় চার ঘণ্টা আশুলিয়ার ইটখোল নামক জায়গায় অপেক্ষার পর লেগুনা, বেবি ট্যাক্সি ও ব্যাটারি রিক্সায় ৫০ টাকার পথ ৪০০ টাকায় পাড়ি দিয়ে গাবতলী যাচ্ছেন।

ভোগড়া বাইপাস এলাকায় যানজটে আটকে থাকা একটি ট্রাকের যাত্রী ওবায়দুল রহমান জানান, সকালে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাস না পেয়ে ট্রাকে চড়ে স্বপরিবারে মাথাপিছু সাত শ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে উঠেন তারা রংপুর যাবার উদ্দেশে।

ঈদের সময় আগে থেকে এসব ট্রাক মহাসড়কে চলাচল বন্ধ থাকার নির্দেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

আশুলিয়া বাজার এলাকায় ডিউটিরত উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষ যেন বাসের ছাদে ও ট্রাকে চেপে যাত্রা করতে না পারে সেজন্য তাদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে। আর সেই মোতাবেক তারা কাজও করে যাচ্ছেন। কিন্তু সড়কে যখন অতিরিক্ত গাড়ি ও মানুষের চাপ তারা সামাল দিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু মাঝে মাঝে মানুষ জোর করেই ট্রাকে উঠে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ওইসময় আর তাদের করার কিছু থাকে না।

সাভার ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা সড়কে যানজট নিরসনের পাশাপাশি ঝাঁকিপূর্ণভাবে যাতে কোনো পরিবহন যাত্রী বহন না করতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখছি। তবে কোথাও কোথাও বেশি ভাড়া আদায় করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী পরিবহনের খবর পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সাইদুর রহমান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার ব্যাপারে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। কারণ এত গাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করার পর এবিষয়ে নজর দিতে গিয়ে তাদের বেগ পেতে হয়। তবে পরিবহনগুলো যেন এভাবে মানুষ বহন করতে না পারে সে দিকে নজরদারি বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/আইআই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :