সরগরম পশুর হাট, কমেছে দাম

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৮, ১৯:১৩

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস

রাত পোহালেই ঈদ। রাজধানীসহ সারাদেশের কুরবানির পশুর হাটগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাবেচা। শেষ দিনে বেশিরভাগ হাটে কমেছে পশুর দাম। গত এক সপ্তাহ যাবৎ ছিল কুরবানির পশু বিক্রির ধুম। শেষ দিনে এসে বিক্রিও বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি।

মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টির জন্য রাজধানীর হাটগুলোতে ক্রেতা সমাগম কিছুটা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের পদচারণা। হাটে পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দরদাম করেই পছন্দের পশুটি কিনে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা। তবে বড় গরুর চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে।

এবার চাহিদার শীর্ষে  আছে দেশি জাতের ছোট আকারের গরু। শুরু থেকে বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছিল এসব গরু। শেষ দিনে এসে আগের দামের চেয়ে কিছুটা সরে এসেছেন বিক্রেতারা। তবে হাটগুলোতে গরু লালন-পালনকারীরা দাম কমালেও আগের দামে গরু বিক্রির চেষ্টা করছেন অনেক ব্যাপারী। ক্রেতাদের অভিযোগ হাত বদলের ফলেই প্রতি বছরের মতো এবারো গরুর দাম বাড়াচ্ছে তারা।

গাবতলি গবাদি পশুর হাটে গরু কিনতে আসা সজীব মাহমুদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, 'আজকেসহ তিন দিন হাটে আসলাম। এখনো গরু কিনতে পারিনি। দেখি শেষ দিকে কি হয়।'

একই কথা জানালেন জালাল উদ্দিন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, 'সবারই একটা বাজেট থাকে। আমরা চাই বাজেটের মধ্যে একটু বড় গরু কিনতে। কারণ কুরবানির একটা অংশ গরিব মানুষের প্রাপ্য। গরুটা বড় হলে তো গরীব মানুষই একটু বেশি মাংস পাবে।'

এই ক্রেতা অভিযোগ করেন, অতি মুনাফার আশায় কিছু মৌসুমী গরু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দর হাঁকছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা মিলেছে এমন মৌসুমী গরু ব্যবসায়ীদের। মোটর মেকানিক রেজাউল গরু কিনেছিলেন ১৪ টি৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিক্রি করেছেন ৮ টি। অবিক্রিত চারটি গরু নিয়ে শেষমেষ এসেছেন গাবতলী হাটে। 

মোহাম্মদপুরের এই বাসিন্দা ঢাকাটাইমসকে বলেন, 'গরু কেনা হয়েছে বেশি দামে। যেগুলো বিক্রি করছি, তাও কেনা দামে। এই চারটা কিছু লাভ না হইলে কিভাবে হয়? ছয় দিন ধইরা দুইটা মানুষ খাটতাছি।'

শুধু হাটে নয়, মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দেখা গেছে রাজধানীর পাড়া মহল্লাগুলোতেও। হাটের বাহিরে কুরবানির পশু বিক্রির অনুমোদন না থাকলেও, হাটের শেষ দিনে তার ব্যত্যয় দেখা গেছে।

মৌসুমী ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশকে দেখা গেছে মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ থেকে মোহাম্মদীয়া হাউজিং সড়কে। গরু ও ছাগলের অলিখিত হাট বসিয়েছে তারা এ স্থানটিতে।

এসব বিক্রেতাদের কেউই পশু পালনের সঙ্গে জড়িত নয়। সবাই মৌসুমী ব্যবসায়ী। এদের কেউ ঢাকার বাহিরে থেকে, কেউবা হাট থেকে গরু কিনে পুনরায় বিক্রি করছেন৷  আর এভাবে হাত বদলের কারণে বেড়েছে দাম। 

এদিকে দুপুরে ক্রেতার আনাগোনা কিছুটা কমে গেলেও বিকাল থেকে পুরোদমে জমে উঠেছে শেষ মুহুর্তের কুরবানির পশু বিক্রির হাট। হাটে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অনেকেই শেষ দিকে কুরবানির পশু কিনবেন। কারণ তখন বিক্রেতারা দামে ছাড় দেবেন বলে আশা তাদের। অন্যদিকে বিক্রেতারাও আশা করছেন, এবার কুরবানির পশু তেমন অবিক্রিত থাকবে না।

ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/কারই/ডিএম