উৎসবে ঢাকাই স্বাদ

তায়েব মিল্লাত হোসেন
 | প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট ২০১৮, ১৪:২১

জাতিগতভাবেই বাঙালি রসনাপ্রিয়। তারও চেয়ে এক কাঠি সরেস ঢাকাইয়ারা। তাদের জীবন যেন খাইদাই গানগাই। বলা যায়, মাংসে-পোলাওয়ে, ঘৃতে-আমৃতিতে মোড়ানো তাদের জীবন। সকালে হয় তেহারি নয় নেহারি। দুপুরে কাচ্চি আর টিকিয়া কাবাব। তারপর রাতের পাতে পড়তে পারে মোরগ-পোলাও। ফাঁকে ফাঁকে এই ভাজাপোড়া এই মিষ্টান্ন। পুরনো ঢাকার অলিগলি সন্ধ্যা হলে যেন ভোজ-উৎসবময়। উৎসবের দিন হলে তো কথাই নেই। ঘরে খাবার। বাইরে খাবার। নিজের বাসায়। পরের বাসায়। খাবার আর খাবার। খেয়ে খেয়ে ক্ষুধার্ত হয়ে আবার খাও, আবার খাবো ভাব।

বাংলার সব অঞ্চলের মতো রাজধানী শহর ঢাকায়ও একমাত্র বঙ্গাব্দের প্রথম দিনের যে আনন্দ তাতে সবার সম্মিলন সমান সমান। হালখাতায় খদ্দেররা আপ্যায়িত হন রকমারি মিষ্টান্নে। বৈশাখী মেলায় বেশি মিলে মুড়ি, মুড়কি, খই, কদমা, বাতাসা, চিনির হাতি- ঘোড়ার মতো খাবারদাবার। পূজা-পার্বণে যথারীতি নিরামিষের প্রাধান্য সবচেয়ে বেশি। মণ্ডা-মিঠাইয়েরও কমতি থাকে না। শাঁখারিবাজার, তাঁতীবাজারে আজও বহমান প্রাচীনতর সেই ধারা।

বড়দিনের দিনেও ঢাকায় উৎসবমুখর একটা ভাব থাকে। এর প্রভাব বেশি থাকে গির্জায়-গির্জায় আর অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁয়। আর এতে খাবার হিসেবে কেক-পেস্ট্রির প্রভাব অনেক অনেক বেশি। বাড্ডা থেকে বাসাবো-ঢাকার যেখানে বৌদ্ধমন্দির আছে, সেই সব এলাকা জমজমাট থাকে বৌদ্ধ পূর্ণিমার দিনে। এই দিনে ঢাকাবাসী বুদ্ধ ভক্তরা পায়েসের বিশেষ পদ করে থাকে। পোলাও-বিরিয়ানি পুরোই বর্জনীয়, আর আমিষ জাতীয় খাদ্য প্রায় বর্জনীয়।

একটা সময় যাই থাক, আজকের ঢাকা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। পৃথিবীর সব শহরেই সংখ্যায় গুরু যারা, তাদের সংস্কৃতি হয় প্রভাববিস্তারী। ব্যতিক্রম নয় ঢাকা শহরও। এই নগরে চলতে-ফিরতে সেই আভাস পাবেন, এটা নিশ্চিত। দিনের বেলায় খাবার বারণ, তাই রমজানের সন্ধ্যে থেকে রাত গভীর পর্যন্ত খাবার অনুশীলনে থাকে ঢাকাইয়ারা। তারপরও সকাল-দুপুর আড়ালঘেরা রেস্তোরাঁ সক্রিয় থাকে। বিকেলে পথে পথে ইফতারির পসরা নিয়ে কত না আয়োজন! শুধু এই কারণেই ঐতিহাসিক চকবাজার পেয়েছে আলাদা খ্যাতি। চক থেকে অনেক দামে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ অনেকেই ‘ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :