লামায় দুই ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ
বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রামখতি ত্রিপুরাপাড়ার দুই ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে) তিন সদস্যের বিরুদ্ধে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী দুজনই বনফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। একজনের বয়স ১৭ এবং অন্যজনের ১৪।
আজ শুক্রবার দুপুরে পরীক্ষার জন্য তাদের জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে দায়িত্বরত চিকিৎসক।
পরিবারের অভিযোগ, বিজিবির তিন সদস্য তাদের ধর্ষণ করেন। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুই কিশোরী ধর্ষণের কথা জানিয়ে লামা থানায় মামলা করেছে। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়। তবে এখনো কাউকে আটক করা যায়নি।
শুক্রবার দুপুরে লামা ও জেলা সদর থানার পুলিশ পাহারা দিয়ে ওই দুই কিশোরীকে পরীক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে সাংবাদিকসহ কাউকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেয়া হয়নি।
হাসপাতালে ওই দুই কিশোরীর সঙ্গে আসা প্রশান্ত ত্রিপুরার ও সুমন ত্রিপুরা জানান, গত বুধবার রাত ১০টার দিকে পাশের বাড়ির জনেরুং ত্রিপুরা নামের এক মহিলা তাদের বোনকে বিজিবি সদস্যরা ডেকেছেন বলে জানান। কিন্তু কেন ডেকেছে জানাননি। এরপর তাদের বোন বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যায়।
দুই কিশোরী তাদের পরিবারকে জানায়, ওই দিন বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে তারা।
ভিকটিম কিশোরীর ভাই প্রশান্ত ত্রিপুরা আরও জানান, এই তিন বিজিবি সদস্যের কাছে পৌঁছার পর তাদের টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের দুজনকে ধর্ষণ করে। এরপর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কাউকে না বলতে নিষেধ করা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. অংশৈপ্রু বলেন, ভিকটিমদের শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে আনার পর তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর ভিকটিমদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তার জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হবে। তবে কতজন নিয়ে বোর্ড গঠন করা হবে তা জানাননি তিনি।
ওই ঘটনার তদন্ত করছেন লামা থানার এসআই মো. আব্দুল্লাহ। তিনি জানান, তাকে ঘটনাটির তদন্তের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে। বাদীর দাবি অনুযায়ী তিনজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। তবে নামগুলো জানাতে অস্বীকৃতি জানান এসআই আবদুল্লাহ।
বিজিবির সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সম্পর্কে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধিনায়ক লে. কার্নেল আসাদুজ্জামান বলেন, বিজিবি নিয়ে এটা এক ধরনের অপপ্রচার মাত্র। এরপরও বিজিবি সদস্যরা জড়িত কি না তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যে নামে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে, ওই নামে তাদের কোনো সদস্য নেই। এ ছাড়া ওই রাতে বিজিবির একটি টহল দল স্থানীয় বনফুর বাজারে ডিউটিরত ছিল। তাদের ত্রিপুরাপাড়ার দিকে যাওয়ার কথা ছিল না।
বান্দরবান পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লামা থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণ ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং বিচারের দাবিতে রোববার সকালে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ত্রিপুরা স্টুুডেন্ট ফোরাম। সংগঠনটির বান্দরাবান জেলার যুগ্ম সম্পাদক শ্রীমন্ত ত্রিপুরা এ তথ্য জানান।
(ঢাকাটাইমস/২৪আগস্ট/মোআ