বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

আবুল হাসান,গাজীপুর
 | প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট ২০১৮, ১৭:৩৪

ঈদুল আজহার ছুটি কাটাতে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আসছেন দেশ বিদেশের পর্যটকরা। বিপুল জনসমাগমে পার্কের প্রতিটি এলাকা সরগরম। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোসহ আগত দর্শনার্থীদের সুবিধায় পার্ক কর্তৃপক্ষের নেয়া নানা উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। তবে পার্কে মসজিদের অভাব, রাস্তা ঘাটের বেহাল অবস্থা ও কোর সাফারি পার্কের গাড়ির সঙ্কটে দুর্ভোগে পড়েন আগত দর্শনার্থীরা।

সরজমিনে দেখা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। তিন হাজার ৮১০ একর জমি বিস্তৃত পার্কটি থাইল্যান্ডের সাফারি পার্কের আদলে তৈরি করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো ও বাঘ, সিংহ, হাতি, জেব্রা, জিরাফসহ ৭৪ প্রজাতির বিভিন্ন প্রাণি দেখতে বিভিন্ন বয়েসী পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় চোখে পড়ার মত। এছাড়া মরুভূমির প্রাণি উট পাখি, কেঙ্গারো, কুমির, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দর্শকদের মোহিত করে। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে এখানে বাঘ, সিংহ, জেব্রা, জিরাফসহ বেশ কয়েকটি প্রজাতির পাণি বাচ্চা দিয়েছে। যা বাড়তি আকর্ষণ করছে দর্শনার্থীদের। প্রাকৃতিক পরিবেশ আর প্রাণিদের অবাধ বিচরণে মুগ্ধ এখানকার দর্শনার্থীরা। এবারের ঈদে আগত দর্শনাথীদের বেশি ভিড় ছিল কোর সাফারি পার্কে। কোর সাফারি পার্কে বাঘ, সিংহ, ভালুক, হরিণ, জেব্রা, জিরাফ ইত্যাদি আলাদা আলাদা সীমানা প্রাচীরের ভেতর উন্মুক্তভাবে বিচরণ করে যা দেখে বিমোহিত পর্যটকরা। আর এসব প্রাণি দেখতে দর্শনার্থীদের পার্কের নির্ধারিত মিনিবাসে চড়ে যেতে হয়। তবে বাড়তি দর্শনার্থীর তুলনায় বাস কম থাকার কারণে এ অংশ দেখতে সৃষ্টি হয় দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন। ঘণ্টার পর ঘন্টা অবস্থান করে ১২শ-১৫শ দর্শনার্থীকে লাইন ধরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে কোর সাফারির প্রবেশ পথে।

পার্কে আসা এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, তিনি আশে পাশের কয়েকটি দেশের সাফারি পার্ক দেখেছেন। তবে এখানে না আসলে বুঝা যেত না এত ভালো মানের একটি সাফারি পার্ক বাংলাদেশে রয়েছে। এখানে বাসে থেকে অত্যন্ত কাছে থেকে যেভাবে প্রাণিগুলো দেখা যায়, অন্য কোথাও এভাবে দেখতে পায়নি।

যাত্রাবাড়ি থেকে আসা ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ইচ্ছে ছিল সাফারি পার্কে আসার। আজ এখানে আসায় সে আশা পূর্ণ হলো। অনেক ভিড় ও কষ্টের মধ্যেও পরিবার নিয়ে দেশি-বিদেশি অনেক পশু-পাখি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেছে। এখানে কোনো বখাটের উৎপাত নেই। টুরিস্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।

এবারের ঈদে দর্শনার্থীদের বিনোদন ও তাদের নিরাপত্তায় পার্কের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাশাপাশি টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে জানিয়ে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তায় মূল ফটক এবং কোর সাফারিতে টুরিস্ট পুলিশের দুইটি টিম এবং স্বেচ্ছাসেবক এবং পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত অপর একটি টিম পুরো পার্কে কাজ করছে। ঈদের পরের দুই দিনের প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ১০ হাজারের মতো দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাফারি পার্কে উন্মুক্ত পরিবেশে থাকা বাঘ, সিংহ, ভালুকসহ দেশি-বিদেশি প্রাণি দেখতে এসেছেন। তাদের নিরাপত্তায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে নিবিড় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তবে বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কটি থাইল্যান্ডের আদলে হওয়ার কথা থাকলে অনেক স্থাপনা ও কাজ বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন পার্কটির সাবেক প্রকল্প কর্মকর্তা ড.তপন কুমার দে। তিনি বলেন, পার্কে এখনো অনেক স্থাপনা ও রাস্তা ঘাটের কাজ শেষ হয়নি। বিনোদনের জন্য বঙ্গবন্ধু টাওয়ার, বার্ড শো গ্যালারিসহ বিনোদনমূলক নানা কর্মকাণ্ড যদি একটি মাস্টার প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়ন করা যায় তবে এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে এবং সরকারের রাজস্ব বেড়ে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :