কে বানাইলো রে…

প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৫৭

কাওসার চৌধুরী

কথায় বলে- রাজা মরে রাজ্য নিয়ে, আর আঁধা মরে তার দু’চোখ নিয়ে! আমারও হয়েছে তাই! বিজ্ঞানের রাজ্যে মানুষ যখন ব্লাক হোল কিংবা সময়ের সীমা নিয়ে ব্যস্ত, আমি তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের এই ‘আলপনা’নিয়ে!

ইনানীতে গিয়েছিলাম সেদিন ১৯৫৮ সালের একটি ঐতিহাসিক স্থান দর্শন করতে। যেখানে বঙ্গবন্ধু অল্প সময়ের জন্য বিরতি-যাপন করছিলেন (কথিত)।...কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক জনাব তোফায়েল আহমদ এই স্থানের আবিষ্কারক। উনিই আমাকে পুরো বিষয়টি/স্থানটি দেখিয়ে এনেছেন।

ইনানী থেকে কক্সবাজার শহরে ফেরার পথে এই ঘটনার জীবিত সাক্ষী লোকমান হাকিম মাস্টারের (৭৮ বছর) একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছিলাম ইনানী সৈকতে! সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে নেমে এলাম সাগরের বেলাভূমিতে। এখানে-ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সৈকতলতা আর বালিয়াড়ি ফুল। ওসবের ছবি তুলতে গিয়ে ক্রমশ নেমে আসি বেলাভূমিতে। ওখানে এসেই নজরে এলো অসাধারণ কিছু আলপনা!

বালির ওপরে এ ধরনের আলপনা জীবনে আরো অসংখ্যবার দেখেছি। কিন্তু এবারে অনুভূতিটা কেমন জানি একটু ভিন্নভাবে অনুভূত হল!

মনে প্রথম প্রশ্ন জাগলো-

১) এই আলপনাগুলো কি কোনো কাঁকড়া প্রজাতির প্রাণীরাই তৈরি করে? ২) যদি তারা করেও থাকে, তাহলে কেন করে? ৩) এটার উদ্দেশ্য কি? ৪) করলো তো করলো- এমন নান্দনিকভাবে বালির ‘পুটলিগুলো’বানায় কেমন করে? ৫) বালির পুটলি না হয় তৈরি হল, কিন্তু সেগুলো এত অসাধারণ নান্দনিকভাবে সাজায় কেমন করে? ৬) সেটা না হয় সাজালো, কিন্তু সাজানোর পরে এসবের ‘স্রষ্টা’লুকায় কোথায়, কেন? ৭) এত সুন্দর ‘সৃষ্টির’পাহারায় স্রষ্টারা থাকে না কেন? ৮) তাদের এত অসাধারণ কর্মগুলো আমাদের মতো খতরনাক মনুষ্যজাত প্রাণীরা যখন ধ্বংস করে দেয়, তখন তাদের অনুভূতি কেমন হয়? ৯) স্রষ্টা কি তখন চোখের জলে সিক্ত হয়? ১০) এরপরেও কিন্তু ‘স্রষ্টা’থেমে থাকে না। তারা তাদের কর্ম চালিয়ে যায়! কেন, কিসের আশায়?

আমার মনে হয়- আপনাদের অনেকের কাছেই আমার জিজ্ঞাসার জবাবগুলো তৈরি আছে। সম্ভব হলে উত্তর দিয়ে আমার মতো বোকা-মানুষকে একটু সহযোগিতা করবেন।

[গত বছর লেখা। ফেসবুক সামনে আনল আজ। ছবিগুলো মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা]

লেখক: অভিনেতা, নির্মাতা।

(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/মোআ)